ঘুরে বেড়ালে বয়স ‘কমবে’, গবেষণায় আরও যেসব চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেল
দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
অক্টোবর ১৭, ২০২৪, ১২:০০ এএম
পরেরবার যখন বেড়াতে বের হবেন, অ্যান্টি-এজিং সিরামটা ঘরেই ফেলে যাবেন।
কেননা, অস্ট্রেলিয়ার এডিথ কাওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা জানাচ্ছে, ভ্রমণ আপনার বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে। শারীরিকভাবে আপনাকে রাখে তরুণ। আবার মানসিকভাবেও আপনি তরুণ অনুভব করেন। সম্প্রতি সায়েন্স ডেইলিতে প্রকাশিত এই গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
ভ্রমণে নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয়, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া, মানসিক উদ্দীপনা, বিভিন্ন অ্যাকটিভিটি, স্পা, ভালো ঘুম, নতুন নতুন খাবার চেখে দেখা—এ সবকিছুই বয়স বাড়ার প্রক্রিয়ার লাগাম টেনে ধরে। এই গবেষণা দলের প্রধান ফাংগলি হু ওয়াশিংটন পোস্টের সঙ্গে জুম কলে বলেন, ‘বয়সকে রুখে দেওয়া অসম্ভব। তবে বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে ফেলা সম্ভব। ঘুরে বেড়ানো এমন একটি কাজ, যা আপনার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে গণস্বাস্থ্যেও সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আর এটা শারীরিক আর মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্যই প্রযোজ্য।’ভ্রমণ মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট থেকেও ভালো
হালের ‘ওয়েলনেস ট্যুরিজম’, ‘হেলথ ট্যুরিজম’ বা ‘ইয়োগা ট্যুরিজম’—স্বাস্থ্যের জন্য ভালো বলে কয়েক বছর ধরে প্রচারিত হয়ে আসছে। বাস্তবতা হলো, যেকোনো ধরনের ভ্রমণই আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ফাংগলি হু আরও জানান, ‘প্রকৃতি, বিশেষ করে সবুজ অরণ্য বা সমুদ্র আমাদের শরীরে আর মনে দারুণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমনকি প্রকৃতির অন্য প্রাণীরাও একইভাবে আমাদের শরীর ও মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এমনকি কিছু শারীরিক রোগেও প্রকৃতির কাছাকাছি ভ্রমণ দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে।’
এ গবেষণায় বলা হয়েছে, মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট, পর্যাপ্ত ঘুম আর ব্যায়ামের ফলে মানুষ যেভাবে উপকৃত হয়, এক ভ্রমণেই মিলবে এর সবকিছু। ভ্রমণ প্রয়োজন পোষা প্রাণীদেরওসিএনএনের প্রতিবেদন জানাচ্ছে, কেবল মানুষের জন্যই নয়, পোষা প্রাণীর ক্ষেত্রেও ভ্রমণ একই রকমভাবে কাজ করে। ২৫ আগস্ট কেপ নামের একটি ছয় বছর বয়সী পোষা পেঙ্গুইন জাপানের সাগরে ভেসে যায়। পেঙ্গুইনটি যাঁর, তিনি দুশ্চিন্তায় বিমর্ষ হয়ে পড়েন। দুই সপ্তাহ পরে পেঙ্গুইনটিকে লোকালয় থেকে খানিকটা দূরে দিব্যি সুস্থ ও শারীরিকভাবে আরও সচল অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।
মো ডেং নামের থাইল্যান্ডের চিড়িয়াখানার আরেকটি জলহস্তীর বাচ্চার তো ঘুরে বেড়ানোর বিভিন্ন সময়ের মুখভঙ্গি ভাইরাল অন্তর্জালের দুনিয়ায়। নিয়মিত তাকে নিয়ে ঘুরে বেড়ান চিড়িয়াখানার কর্মীরা। সবার সঙ্গে বেশ বন্ধুত্বও পাতিয়ে ফেলেছে এই জলহস্তী। বোঝাই যাচ্ছে, বেড়াতে তার বেশ লাগে। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের জন বেকার নামের এক জন্মান্ধ নারী গত ২০ বছরে প্রযুক্তির সহায়তায় একা একাই ইতিমধ্যে বিশ্বের ৫৬টি দেশে ঘুরেছেন।
ঘুরে বেড়ানোই তাঁর নেশা। মধ্যবয়সী এই নারী সিএনএনকে জানান, সাধারণত ভ্রমণকারীরা একজন অন্ধ মানুষকে তাঁদের দলভুক্ত করতে চান না। তবে দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন মানুষ যা যা অনুভব করে, তিনিও নাকি তা–ই অনুভব করেন। দেখতে পান না বলে ভ্রমণের কিছুই মিস করেন না তিনি।
আপনার মতামত লিখুন: