জুলাই ১৬, ২০২৫, ০৫:৩৭ পিএম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার সকাল থেকেই গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে হামলা, এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে ভাঙচুর এবং পরে পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই একদল সশস্ত্র ব্যক্তি এনসিপির নেতাকর্মীদের ঘিরে হামলার চেষ্টা করে। তারা চারদিক থেকে এনসিপির নেতাকর্মী ও পুলিশের গাড়ি আটকে দেয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এনসিপির নেতাকর্মীরা অন্য দিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেছেন, "আমরা যখন রওনা দিয়েছি, তখন গ্রাম থেকে যত আওয়ামী লীগ-যুবলীগ, সারা দেশ থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন এসে আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমরা এখন একটি জায়গায় অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি শান্ত। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন, আর্মি পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে।"
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপি সমাবেশস্থলে হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সমাবেশে উপস্থিত থাকা এনসিপির নেতাকর্মীরা এই হামলার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগ মঞ্চে থাকা সাউন্ড বক্স, মাইক ও চেয়ার ভাঙচুর করে। গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা মোতায়েন রয়েছে। সকালে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার মধ্যে ইউএনও’র গাড়িবহরে হামলা, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ঘটনাস্থলে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
গোপালগঞ্জে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া সড়ক, গোপালগঞ্জ টেকেরহাট সড়ক ও টুঙ্গিপাড়ায় এপিসি মোতায়েন করেছে সেনাবাহিনী। গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মাসজুড়ে জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
আপনার মতামত লিখুন: