বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

গোপালগঞ্জে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ৪: এনসিপির সমাবেশ ঘিরে রণক্ষেত্র

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ১৬, ২০২৫, ১১:০৩ পিএম

গোপালগঞ্জে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ৪: এনসিপির সমাবেশ ঘিরে রণক্ষেত্র

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সমাবেশ ঘিরে গোপালগঞ্জে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হামলা ও সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন, যাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে হাসপাতাল ও নিহতদের পরিবার সূত্রের বরাতে এই হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন: গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮), টুঙ্গীপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১) এবং সদর উপজেলার ভেড়ার বাজার এলাকার ইমন (২৪)

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস জানিয়েছেন, বিকেলে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তারা সবাই গুলিবিদ্ধ ছিলেন। এছাড়াও, আরও ৯ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তাদের অস্ত্রোপচার চলছে। পরবর্তীতে আরও একজন নিহতের খবর নিশ্চিত হয়। দেশের প্রথম সারির একটি সংবাদমাধ্যমকে স্বজনরা নিহত দীপ্ত সাহা ও রমজান কাজীর পরিচয় নিশ্চিত করেছেন, তবে অপরজনের মৃত্যুর বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

নিহত দীপ্ত সাহার চাচা হাসপাতালে জানান, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গী এলাকায় তার পেটে গুলি লাগে। নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী আহাজারি করে বলেন, "আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলছে। আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। আমি আমার সন্তানকে কোথায় পাব?" এ ঘটনায় গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ কামরুজ্জামান এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. গোলাম কবিরের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

এদিন গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশস্থলে প্রথমে হামলা হয়। সমাবেশ শেষ করে এনসিপি নেতারা বের হওয়ার সময় তাদের ঘিরে আবার হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এই হামলা-সংঘর্ষের ঘটনাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে চারজনের প্রাণহানি ঘটে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এই সমাবেশ ও দলটির নেতাদের ওপর হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন। এই ঘটনা গোপালগঞ্জে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং স্থানীয় রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।