শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ভারতকে নাজেহাল করে লাল বলের ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন

স্পোর্টস ডেস্ক

জুলাই ১৮, ২০২৫, ১২:১৪ পিএম

ভারতকে নাজেহাল করে লাল বলের ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন

ইংল্যান্ডের গতি তারকা জোফরা আর্চার, যিনি একসময় অ্যাশেজ এবং ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ে ইংল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন, দীর্ঘ চার বছর ধরে ইনজুরিজনিত কারণে টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। কনুই ও পিঠের একের পর এক চোট তাকে মাঠের বাইরে রেখেছিল। তবে সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজে তার প্রত্যাবর্তন হয়েছে। লর্ডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করে তিনি স্বরূপে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং এখন তার মূল লক্ষ্য আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের স্কোয়াডে জায়গা করে নেওয়া।

দীর্ঘ চার বছর পর টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন করে আবারও স্বরূপে ফিরেছেন ইংল্যান্ডের গতিতারকা জোফরা আর্চার। ভারতের বিপক্ষে লর্ডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তার দুর্দান্ত বোলিং এবং দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান তাকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে। এই পারফরম্যান্সের পর আর্চারের নজর এখন চলতি বছরের নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হতে যাওয়া অ্যাশেজ সিরিজের দিকে।

৩০ বছর বয়সী এই ডানহাতি পেসার সর্বশেষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট খেলেছিলেন। ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার জন্য দীর্ঘ পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষে তিনি সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে মাঠে ফেরেন। এই ম্যাচে তিনি দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট শিকার করেন, যার মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩টি উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে ২২ রানের নাটকীয় জয় এনে দিতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন। তার বোলিংয়ে ছিল পুরনো গতি ও ধার। ম্যাচের ৭৩তম ওভারে তার ৬টি ডেলিভারির গড় গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার, যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ গতির ওভার। তার ১৫০ কিলোমিটার গতির বলগুলো ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল।

লর্ডস টেস্টে তার এই পারফরম্যান্সের পর আর্চার নিজেই স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যাশেজে খেলার বিষয়ে তার প্রবল ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "যদি আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আমি (ভারতের বিপক্ষে) বাকি দুটি টেস্টেও খেলতে পারব। আমি এই সিরিজ খেলার সুযোগ হারাতে চাই না। আমি গ্রীষ্মের টেস্টগুলো খেলতে চাওয়ার কথা কি (ইংল্যান্ড দলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কি) কে বলেছি। আর আমি অ্যাশেজেও থাকতে চাই। আমার মনে হয়, একটি ধাপ এরই মধ্যে পার করেছি এবং নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিমানে চড়তে সামর্থ্যের সবকিছু করব।"

২০২২ সালে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকস টেস্ট দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইংল্যান্ডের 'বাজবল' স্টাইলে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই নতুন কৌশলের অধীনে দলে ফিরতে পেরে আর্চার বেশ সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, "এটাই সেই ফরম্যাট যেখানে ফিরতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগত। তাই গত দেড়-দুই বছর ধরে আমি ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি খেলছিলাম। বাজ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ছেলেরা দারুণ রোমাঞ্চকর ক্রিকেট খেলছে। এই দলের মানসিকতা আমার ক্রিকেট খেলার ধরনের সঙ্গে মানায়, তাই মাঠে ফেরার জন্য আমার আর তর সইছিল না।"

আর্চারের এই প্রত্যাবর্তন ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলিং আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে অ্যাশেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে তার উপস্থিতি দলের জন্য বাড়তি সুবিধা দেবে। তার মতো একজন গতিময় ও আগ্রাসী পেসার প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের জন্য বরাবরই ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ান। ইংল্যান্ড ক্রিকেট ম্যানেজমেন্টও তাকে সাবধানে ব্যবহার করছে যাতে তিনি দীর্ঘমেয়াদী ফিট থাকতে পারেন।