জুলাই ১৭, ২০২৫, ০৪:০২ পিএম
মুসলিম বিশ্বের পুণ্যভূমি হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব এখন তার ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে। তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো এবং অর্থনীতিকে বহুমুখী করার লক্ষ্য নিয়ে বাদশাহ সালমানের ‘সৌদি ভিশন ২০৩০’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে দেশটিতে সিনেমা, সংগীত ও থিয়েটার কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হচ্ছে।
সৌদি গেজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির শূরা কাউন্সিল সম্প্রতি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতি সংগীত, সিনেমা, থিয়েটার ও অভিনয় বিষয়ক একাডেমিক প্রোগ্রাম বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। এ লক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনগুলোকে সম্পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটি সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং সমাজে উদারীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
গত সোমবার শূরা কাউন্সিলের বৈঠকে জাতীয় জাদুঘরের প্রদর্শনীগুলোতে নতুনত্ব আনারও আহ্বান জানানো হয়। জাদুঘরে প্রতিনিয়ত নতুন আবিষ্কৃত নিদর্শনগুলো যুক্ত করার ওপর জোর তাগিদ দেন শূরা কাউন্সিলের সদস্যরা। সৌদি সরকার চায়, স্কুল এবং স্থানীয়ভাবে থিয়েটার কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে, যা দেশটির তরুণ প্রজন্মের মধ্যে শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঐতিহাসিকভাবে সৌদি আরবে সিনেমা ও সংগীতের মতো বিনোদনের মাধ্যমগুলো কঠোর ধর্মীয় বিধিনিষেধের কারণে সীমিত ছিল। তবে, ‘ভিশন ২০৩০’ এর লক্ষ্য পূরণের অংশ হিসেবে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সংস্কৃতি ও বিনোদন খাতে বড় আকারের বিনিয়োগ করছেন। এর ফলে নতুন সিনেমা হল নির্মাণ, আন্তর্জাতিক সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন এবং সাংস্কৃতিক উৎসবের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলো কেবল স্থানীয়দের জন্য নতুন বিনোদনের সুযোগ তৈরি করছে না, বরং পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতেও সহায়তা করছে, যা ‘ভিশন ২০৩০’ এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এই পদক্ষেপগুলো সৌদি সমাজকে আরও উন্মুক্ত এবং আধুনিক করার একটি প্রচেষ্টা। যদিও এই পরিবর্তনগুলো কিছু রক্ষণশীল মহলে সমালোচিত হচ্ছে, তবুও সরকার তার সংস্কারের এজেন্ডা নিয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
আপনার মতামত লিখুন: