জুলাই ৩০, ২০২৫, ০৬:২৯ পিএম
রহস্যজনক মৃত্যু এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সমাজে গভীর উদ্বেগ ও ভীতির সৃষ্টি করে। বিশেষত যখন একজন তরুণ শিক্ষার্থী এমন ঘটনার শিকার হন, তখন তা জনমনে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। সম্প্রতি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক কলেজছাত্রীর ধানক্ষেত থেকে রহস্যজনক মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনাটি তেমনই এক চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। এই ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন এবং জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, যার দ্রুত ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি উঠেছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক কলেজছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরে ধানক্ষেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত কলেজছাত্রীর নাম সুলতানা আক্তার রত্না (২০)। তিনি মাঝাপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে এবং দেবীগঞ্জ মহিলা কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
ঘটনার বিবরণ ও আলামত: স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যে জায়গায় রত্নার মরদেহ পাওয়া যায়, সেখানে কিছুদিন আগে ধানের চারা রোপণ করা হয়েছিল এবং জমিতে পানি ছিল। রত্নার সঙ্গে ছিল একটি কাপড়ের ব্যাগ, যার ভেতর ছিল পরনের কাপড় ও দুটি সেদ্ধ ডিম। এ ছাড়া, তিনি এক হাতে মোবাইল ফোনের কভার ধরে রেখেছিলেন, তবে মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি।
রত্নার বড় ভাই মামুন ইসলাম জানান, “আমি সকাল ৬টায় বাসা থেকে কাজে বের হই। ৭টার দিকে প্রতিবেশী কাওসার তার জমিতে আগাছানাশক দিতে গিয়ে ধান ক্ষেতে এক মেয়েকে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখে। তার চিৎকারে ছুটে গিয়ে দেখি, সেটি আমার বোন। কোলে তুলে বাসায় নিয়ে আসি।”
রত্নার বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, “রাত ১২টার দিকে আমি বাইরে থেকে বাসায় ফেরার পর রত্না আমাকে ভাত বেড়ে দেয়। রাত দেড়টা পর্যন্ত জেগে ছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, মেয়ের ঘরের দরজা খোলা। স্ত্রী জানায় মেয়ে ঘরে নেই। এর কিছুক্ষণ পর খবর পাই ধান ক্ষেতে এক মেয়েকে পাওয়া গেছে। পরে দেখি সেটা আমার মেয়ে।”
পুলিশি তদন্ত ও সন্দেহ: খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, রত্নার গলায় দাগ পাওয়া গেছে। এছাড়া আর তেমন কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, “পুলিশের পাশাপাশি সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। যেহেতু এটি একটি হত্যাকাণ্ড। আমরা গভীরভাবে খতিয়ে দেখছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।”
এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাটি স্থানীয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত রহস্য উন্মোচন জরুরি।
আপনার মতামত লিখুন: