জুলাই ১৬, ২০২৫, ১১:১৯ পিএম
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে তৈরি ভিডিও কনটেন্ট নিয়ে ইউটিউব নতুন ও কঠোর নীতিমালা ঘোষণা করেছে। প্ল্যাটফর্মে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য কিছু নতুন নিয়ম মেনে চলার বাধ্যবাধকতা তৈরি করবে।
ইউটিউব মূলত ডিপফেক এবং বাস্তবতার বিকৃত উপস্থাপনা ঠেকাতে এই নতুন নীতিমালা নিয়ে এসেছে। এখন থেকে, এআই দ্বারা তৈরি বা সম্পাদিত ভিডিওতে যদি কোনো বাস্তব ব্যক্তি বা ঘটনার বিকৃত চিত্র তুলে ধরা হয়, তবে ক্রিয়েটরদের তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। এই ধরনের কনটেন্টকে 'সিনথেটিক' বা 'পরিবর্তিত' হিসেবে লেবেল করতে হবে, যাতে দর্শকরা বুঝতে পারেন তারা যা দেখছেন তা শতভাগ বাস্তব নয়।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, যদি কোনো এআই-জেনারেটেড ভিডিওতে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে বা কোনো ব্যক্তির সম্মানহানি ঘটে, তাহলে ইউটিউব কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এর মধ্যে ভিডিও সরিয়ে ফেলা, মনিটাইজেশন স্থগিত করা, এমনকি চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার মতো পদক্ষেপও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো এআই-এর অপব্যবহার রোধ করা এবং প্ল্যাটফর্মে ভুয়া খবরের বিস্তার কমানো।
ইউটিউবের এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে এলো যখন বিশ্বজুড়ে এআই-জেনারেটেড কনটেন্ট নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রচার এবং জনমত প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে ডিপফেক ভিডিওর ব্যবহার উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ইউটিউব চাইছে তাদের প্ল্যাটফর্মকে এই ধরনের অপব্যবহার থেকে সুরক্ষিত রাখতে এবং দর্শকদের কাছে একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই নীতিমালা এআই কনটেন্টের মান নিয়ন্ত্রণ এবং নির্মাতাদের মধ্যে দায়িত্বশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে। যারা সততা ও স্বচ্ছতার সাথে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরি করেন, তারা এই নীতিমালার আওতায় কাজ করতে পারবেন। তবে, যারা অসৎ উদ্দেশ্যে এআই ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এই পরিবর্তনের ফলে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের আরও সচেতন হতে হবে। তাদের এখন নিশ্চিত করতে হবে যে, তাদের এআই-জেনারেটেড ভিডিওগুলো নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং দর্শকদের কাছে স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে এআই কনটেন্টের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আপনার মতামত লিখুন: