সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ বৃষ্টি ও ভূমিধসে ১৮ জনের মৃ/ত্যু,

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২১, ২০২৫, ১১:১৭ এএম

দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ বৃষ্টি ও ভূমিধসে ১৮ জনের মৃ/ত্যু,

দক্ষিণ কোরিয়ার স্বরাষ্ট্র ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এই ভয়াবহ পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণাঞ্চলীয় সানচেওং এলাকায়, যেখানে একযোগে ১০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের কারণে অসংখ্য বাড়িঘর মাটির নিচে চাপা পড়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা খবরে জানা গেছে, এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসংখ্য মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের তথ্যানুযায়ী, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। প্রায় ১ হাজার ২০০-এর বেশি বাড়িঘর ও অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। জরুরি উদ্ধার কাজে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী, দমকল বাহিনী এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া মানুষ এবং নিখোঁজদের সন্ধানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই উদ্ধার অভিযানের মধ্যেই দেশটির আবহাওয়া বিভাগ নতুন করে এক আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে যে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হতে পারে। কিছু অংশে তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা বন্যা পরিস্থিতির পর সাধারণ মানুষের দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।

বিভিন্ন সূত্রমতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় এ ধরনের চরম আবহাওয়া ঘন ঘন দেখা যাচ্ছে। ২০২২ সালেও টানা বৃষ্টিতে ভূমিধস ও বন্যায় কমপক্ষে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে এবার পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ ধারণ করেছে বলে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন কর্তৃপক্ষ মত দিয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে এবং এর মোকাবেলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি সতর্কতা জারি রয়েছে এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার জন্য ক্রমাগত আহ্বান জানানো হচ্ছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দক্ষিণ কোরিয়ার অবকাঠামো এবং অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা থেকে উত্তরণে সরকারকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।