সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

উরফি জাভেদের ফোলা মুখ ও ঠোঁট: ফিলার্স অপসারণের যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া

বিনোদন ডেস্ক

জুলাই ২১, ২০২৫, ০২:১২ পিএম

উরফি জাভেদের ফোলা মুখ ও ঠোঁট: ফিলার্স অপসারণের যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া

ছবি- সংগৃহীত

বলিউডের ফ্যাশন আইকন হিসেবে পরিচিত উরফি জাভেদ, যিনি তার সাহসী এবং প্রায়শই বিতর্কিত পোশাকের জন্য আলোচনার শীর্ষে থাকেন, এবার পোশাকের কারণে নয়; বরং তার আকস্মিক শারীরিক পরিবর্তনের জন্য খবরের শিরোনামে এসেছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু ছবি ও ভিডিওতে উরফির মুখ ও ঠোঁট অস্বাভাবিকভাবে ফোলা দেখা গেছে, যা দেখে তার ভক্তদের মধ্যে উদ্বেগ ও কৌতূহল দুটোই ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই তার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং এর পেছনের আসল কারণ জানতে চেয়েছেন।

 সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, উরফির ঠোঁটে বারবার ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে, যা দেখে অনেকেই প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তার মুখমণ্ডলের এই অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। কেউ কেউ অ্যালার্জির আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, উরফি কি কোনো নতুন কসমেটিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন?

তবে এই হঠাৎ পরিবর্তনের আসল কারণ উরফি নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি তার মুখের পুরোনো ফিলার্স (Fillers) অপসারণ করাচ্ছেন, কারণ সেগুলোতে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল বা সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। উরফি স্পষ্ট করে বলেছেন, এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। তার এই স্বীকারোক্তি ভক্তদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরিয়ে আনলেও, প্রক্রিয়াটির ভয়াবহতা নিয়ে অনেকেই সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।

উরফি জাভেদ এর আগেও জনসম্মুখে স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি তার ঠোঁটে ফিলার্স ও বোটক্স ব্যবহার করেছেন। তার এই খোলামেলা স্বীকারোক্তি তারকাদের মধ্যে কসমেটিক পদ্ধতির ব্যবহার নিয়ে প্রচলিত লুকোচুরি ভাঙতে সাহায্য করেছে। এবার তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে তিনি আবারও ফিলার্স করাবেন, তবে সুচ ব্যবহার না করে ভিন্ন কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করবেন, যা হয়তো কম যন্ত্রণাদায়ক হবে।

 উরফির এই ঘটনা আবারও সৌন্দর্যচর্চার নামে প্রচলিত কসমেটিক পদ্ধতির ঝুঁকি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো সামনে নিয়ে এসেছে। বোটক্স এবং ফিলার্সের মতো পদ্ধতিগুলো দ্রুত সৌন্দর্য বৃদ্ধি করলেও, এর সঠিক ব্যবহার না হলে বা ভুল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হলে তা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। মুখের ফিলার্স ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনা বিরল না হলেও, উরফির মতো একজন জনপ্রিয় তারকার ক্ষেত্রে এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এই বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্লাস্টিক সার্জনদের মতে, ফিলার্স প্রয়োগের পর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন ফোলা, ব্যথা, লালচে ভাব দেখা দিতে পারে, যা সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যে চলে যায়। তবে, যদি ফিলার্স সঠিকভাবে প্রয়োগ না করা হয় অথবা পুরনো ফিলার্স দীর্ঘ সময় ধরে ত্বকের নিচে থেকে যায়, তাহলে ইনফেকশন, ডিসপ্লেসমেন্ট বা অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনের মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ফিলার্স অপসারণের প্রয়োজন হতে পারে, যা আসলেই একটি যন্ত্রণাদায়ক এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি উরফির চোখ-মুখ অ্যালার্জির কারণে ফুলে যাওয়ার আরও একটি ঘটনা ঘটেছিল, যখন তিনি চিকিৎসকের পরামর্শ চেয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছবি পোস্ট করেছিলেন। এই ঘটনাগুলো উরফির শারীরিক সংবেদনশীলতা এবং কসমেটিক পদ্ধতির প্রতি তার নির্ভরতার একটি চিত্র তুলে ধরে।

 উরফির এই খোলামেলা স্বীকারোক্তি এবং তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একদল ভক্ত তার সততা ও সাহসের প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ তার এই ধরনের সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করছেন। এই ঘটনা তারকাদের সৌন্দর্যচর্চার প্রবণতা এবং এর পেছনের বাস্তবতা নিয়ে একটি বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। এটি সাধারণ মানুষকে কসমেটিক পদ্ধতির ইতিবাচক দিকের পাশাপাশি এর সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো সম্পর্কেও অবগত করছে। একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে উরফির এমন স্বীকারোক্তি হয়তো অন্যদের আরও সতর্ক করবে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়া কোনো কসমেটিক পদ্ধতি গ্রহণ না করার বার্তা দেবে।

 উরফি জাভেদের মুখ ও ঠোঁটের আকস্মিক ফোলা এবং তার পেছনে ফিলার্স অপসারণের যন্ত্রণাদায়ক প্রক্রিয়া, সৌন্দর্যচর্চার অন্ধকার দিকটি উন্মোচন করেছে। এটি কেবল উরফির ব্যক্তিগত ঘটনা নয়, বরং তারকাদের সৌন্দর্যবর্ধক প্রক্রিয়ার প্রতি মোহ এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এই ঘটনা নিঃসন্দেহে কসমেটিক পদ্ধতি গ্রহণের আগে আরও সতর্কতা এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে, যা একদিকে যেমন ভক্তদের উদ্বেগ কমাবে, তেমনি সচেতনতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।