শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২
জামায়াতে ইসলামী

আগামীর বাংলাদেশে আরেকটি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেন জামায়াত আমির

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ১৯, ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম

আগামীর বাংলাদেশে আরেকটি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেন জামায়াত আমির

সংগৃহীত

রাজনীতির ময়দানে নতুন উত্তাপ ছড়ালেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫ তারিখে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত দলীয় জাতীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি আগামীর বাংলাদেশে 'আরেকটা লড়াই হবে' বলে মন্তব্য করেছেন। তার এই বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা ও বিশ্লেষণের জন্ম দিয়েছে।

 

আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তৃতায় অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলেন, "আমি বলতে চাই আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে? আমি বলব আরেকটা লড়াই হবে ইনশাআল্লাহ।" তার এই মন্তব্যের পরপরই তিনি সেই লড়াইয়ের দুটি মূল ক্ষেত্র চিহ্নিত করেন: "একটা লড়াই হবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আরেকটা লড়াই হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে।" এই দুটি বিষয়কে তিনি আগামীর বাংলাদেশের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে তুলে ধরেছেন, যা দেশের বিদ্যমান রাজনীতিক পরিস্থিতির উপর তার গভীর পর্যবেক্ষণের ইঙ্গিত বহন করে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই বক্তব্য জামায়াতের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল এবং আন্দোলনের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে।

 

মাঠ পর্যায়ে ঘুরে দেখা গেছে, জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এমন একটি জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে। এই সমাবেশকে জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন এবং জনসমর্থন যাচাইয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সমাবেশের প্রস্তুতিতে জামায়াত ব্যাপক লোকসমাগমের চেষ্টা করেছিল এবং বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন। ডা. শফিকুর রহমানের এই ধরনের আক্রমণাত্মক বক্তব্য, বিশেষ করে 'লড়াইয়ের' ঘোষণা, নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে এবং তাদের চাঙ্গা করার একটি প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামায়াতের একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

 

বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান এবং তাদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে নানা মহলে জল্পনা-কল্পনা চলছে। এই জনসভা এবং আমিরের বক্তব্য সেই জল্পনাকে আরও উসকে দিয়েছে। 'ফ্যাসিবাদ' এবং 'দুর্নীতি'র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যে ডাক তিনি দিয়েছেন, তা দেশের প্রধান বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলনের সঙ্গে কিছুটা সাদৃশ্যপূর্ণ। তবে জামায়াত এককভাবে এই লড়াই কতটা এগিয়ে নিতে পারবে, তা সময়ই বলবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের এই বক্তব্য মূলত তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক অস্তিত্ব জানান দেওয়া এবং নিজেদেরকে একটি প্রতিবাদী শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা। এটি আগামী দিনের রাজনৈতিক সমীকরণকে প্রভাবিত করতে পারে।

 

জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের 'আরেকটা লড়াই হবে' শীর্ষক ঘোষণা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি একদিকে যেমন দলটির ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সম্পর্কে একটি ইঙ্গিত দিচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ফ্যাসিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ের ডাক দেশের মানুষের মধ্যে কতটা সাড়া ফেলবে এবং জামায়াতের এই আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি কী হবে, তা জানতে আগামী দিনগুলোর ঘটনাবলীর দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে।