আগস্ট ২, ২০২৫, ০৪:৩০ পিএম
উত্তরার দিয়াবাড়িতে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর আলম (অব.)। মাত্র ৯ মিনিটের ব্যবধানের জন্য সেদিনের বিমান দুর্ঘটনা থেকে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
আজ শনিবার (২ আগস্ট) সকালে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত ও আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য লাভের কামনায় আয়োজিত শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান অধ্যক্ষ।
ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর আলম (অব.) বলেন, "স্কুল ছুটির সময় আমি মূলত বারান্দায় দাঁড়াই, হাঁটাহাঁটি করি, শিক্ষকদের, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন দেখি, স্টুডেন্টদের দেখি। ওই দিন প্রধান শিক্ষিকা ডেকে নিয়ে গেলেন, দুপুর ১টার সময় দুজন নতুন শিক্ষকের সাক্ষাৎকার নেবেন। বেলা ১টা ৪ মিনিটের দিকে বের হয়ে সেখানে গেলাম।"
তিনি আরও বলেন, "আর ১টা ১২ থেকে ১৩ মিনিটের মাঝামাঝি সময়ে বিমান দুর্ঘটনা ঘটল। না হলে হয়তো আমিও লাশ হতে যেতাম।"
অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন, "যারা আমাদের ছেড়ে গেছে, তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এই দুর্ঘটনা যদি ১টা ৪-৫ মিনিটের দিকেও হতো, তাহলে আমরা যে কত কিছু হারাতাম, আরও কতজন মা-বাবা যে সন্তানহারা হতেন; কারণ, স্কুল ছুটির পর প্রায় ১০ মিনিট লাগে বাচ্চাদের বের হতে।"
শিক্ষক-কর্মচারীদের উদ্ধারকাজে ভূমিকার কথা স্মরণ করে অধ্যক্ষ তাদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, "আপনাদের কষ্ট, আপনাদের বেদনা সবকিছুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। যদি কারও মনে এতটুকুও মনে হয় অবহেলাজনিত কারণে, এর দায় একমাত্র আমার আর কারও নয়। আপনারা যেকোনো বিচার করতে পারেন।"
অনুষ্ঠানে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী জারিফ হাসানের বাবাকে কিছু বলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। বাবা হাবিবুর রহমান গভীর দুঃখের সঙ্গে জানান, "সেদিন নাকি ও স্কুলে আসতে চায়নি। ওর মা বলল।" তিনি আরও বলেন, "ছেলেটা আমার খুব চটপটে ছিল। সে খুব ফ্রেন্ডলি ছিল।"
শোক ও দোয়া অনুষ্ঠানের শুরুতে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার। শেষে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলেজের ইংরেজি শিক্ষক নুসরাত আলম।