আগস্ট ১১, ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
ভারতীয় লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ভোটার তালিকা ইস্যুতে সংসদ থেকে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় পর্যন্ত বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীসহ বেশ কয়েকজন বিরোধী সংসদ সদস্যকে আটক করেছে। সোমবার (১১ আগস্ট, ২০২৫) সকালে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
দিল্লি পুলিশের ডিসিপি দেবেশ কুমার বলেছেন, "নির্বাচন কমিশন প্রায় ৩০ জন সংসদ সদস্যকে বৈঠকের অনুমতি দিয়েছিল। তবে, সংসদ সদস্যদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ার কারণে তাদেরকে আটক করা হয়েছে।" তিনি আরও বলেন, "তাদের বলা হয়েছিল যে ৩০ জনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যে কোনো ৩০ জন আসতে পারেন। কিন্তু তাদের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল, তাই তাদের আটক করা হয়েছে।"
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, "আমরা বিক্ষোভকারীদের আটক করার নির্দেশ পেয়েছি এবং নির্বাচন কমিশনের প্রধান গেট থেকে গণমাধ্যমকে দূরে রাখতে বলা হয়েছে।"
আটকের সময় রাহুল গান্ধী উপস্থিত নেতাকর্মী ও জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, "এটা সংবিধান বাঁচানোর লড়াই।" পাশাপাশি স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রকাশেরও দাবি জানান তিনি।
এদিকে, পুলিশ আটক করে বাসে তোলার পরেই ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন কংগ্রেস নেত্রী মহুয়া মৈত্র, আরামবাগের তৃণমূল এমপি মিতালি বাগ সহ বেশ কয়েকজন। সংসদ সদস্যদের অসুস্থতার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছে খোঁজখবর নেন রাহুল গান্ধী। বাস থেকে নেমে অসুস্থ সংসদ সদস্যকে অন্য গাড়িতে তুলে দেন তিনি।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য সাগরিকা ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ নারী সংসদ সদস্যদের ওপর বলপ্রয়োগ করেছে, চুল ধরে টেনেছে। সাগরিকার পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের বাসের পেছনের আসনেই বসে আছেন অসুস্থ মহুয়া। তাকে ঘিরে রয়েছেন অন্য নারী এমপিরা এবং সবাই মহুয়ার শুশ্রূষা করছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সোমবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাওয়ের কর্মসূচি পালন করে বিরোধী দলগুলো। এসআইআর-এর কারণে বিহারের ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। বিহারের ভোট চলতি বছরের শেষে। বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, আসাম, তামিলনাড়ুতেও বিধানসভা ভোট।
বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশনকে বিজেপি ব্যবহার করছে এবং ভোটার তালিকা বদলে বিজেপির জয় নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছেন, ভোট চুরি হচ্ছে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। এসআইআর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। শীর্ষ আদালত এসআইআর প্রক্রিয়ায় এখনও কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, তবে কমিশনকে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। মামলার শুনানি এখনও চলছে। এই আবহেই সোমবার বিরোধীরা কমিশন অভিযান করে।