সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি, বাস্তবতা বলছে অন্যকথা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম

পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি, বাস্তবতা বলছে অন্যকথা

ছবি- সংগৃহীত

সম্প্রতি প্রকাশিত হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্স ২০২৫ অনুযায়ী, বাংলাদেশের পাসপোর্ট তিন ধাপ এগিয়ে ৯৪তম স্থানে উঠে এসেছে। এই সূচকটি মূলত কোনো দেশের পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া কতটি দেশে ভ্রমণ করতে পারেন তার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। নতুন এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা বিশ্বের ৩৯টি দেশে ভিসা ছাড়া বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে এই পরিসংখ্যান ইতিবাচক মনে হলেও, বিদেশ ভ্রমণের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।

হেনলি ইনডেক্স অনুসারে, যে ৩৯টি দেশে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়া যেতে পারেন, তার অধিকাংশই এমন দেশ যেখানে বাংলাদেশি পর্যটকদের যাতায়াত খুব কম। এই তালিকার মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ (যেমন মালদ্বীপ, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা) ছাড়া বাকি দেশগুলো বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের কাছে তেমন আকর্ষণীয় নয়।


বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশি পর্যটক ও কর্মজীবীদের আগ্রহের মূল গন্তব্য হলো মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলো। বর্তমানে এই দেশগুলোতে ভিসা পেতে নানা ধরনের জটিলতা ও কড়াকড়ির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

 গত জুলাই মাসে মালয়েশিয়া ৩০০-এরও বেশি বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠিয়েছে, যদিও তাদের বৈধ ভিসা ছিল। নিরাপত্তাজনিত সন্দেহ ও কাগজপত্র অসঙ্গতিপূর্ণ থাকার অভিযোগে তাদের প্রবেশাধিকার বাতিল করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার কারণে ভবিষ্যতে ভিসা প্রাপ্তি আরও কঠিন হতে পারে।

 গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশের ক্ষমতার পালাবদলের পর ভারত গুরুতর অসুস্থ রোগী ছাড়া অন্যদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করে, যা এখনো বহাল আছে। এর ফলে চিকিৎসা ও অন্যান্য কারণে ভারতে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের ভোগান্তি বেড়েছে।

 বহুদিন ভিসা বন্ধ রাখার পর গত ৮ মার্চ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আমিরাত আবার ভিসা দেওয়া শুরু করে। কিন্তু গত ১০ মে থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আবার ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। এক আমিরাত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভিসা ও অবস্থানের নিয়ম ভাঙার ২৫ শতাংশের বেশি ঘটনা বাংলাদেশিরা ঘটিয়ে থাকেন, যা ভিসায় কড়াকড়ির একটি বড় কারণ।

 যুক্তরাজ্যের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যানের হার বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। ২০২৪ সালে বাংলাদেশি আবেদনকারীদের প্রায় ৫৪.৯০ শতাংশ আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, যেখানে বৈশ্বিক গড় মাত্র ২১ শতাংশ। শেনজেন ভিসা অঞ্চলের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। ২০২৪ সালে বাংলাদেশিদের ২০ হাজার ৯৫৭টি শেনজেন ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়, যা মোট আবেদনের ৫৪.৯০ শতাংশ।