মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

নিউইয়র্কে বন্দুক হামলায় বাংলাদেশিসহ নিহত ৪

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৯:৪৮ এএম

নিউইয়র্কে বন্দুক হামলায় বাংলাদেশিসহ নিহত ৪

ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতা একটি বড় সমস্যা, যা প্রায়শই নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। কর্মস্থল বা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে এমন বন্দুক হামলার ঘটনা একদিকে যেমন নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তোলে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচনার জন্ম দেয়। সম্প্রতি নিউইয়র্কের একটি অফিস ভবনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বন্দুক হামলার ঘটনায় একজন বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে, যা প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে একটি অফিস ভবনে বন্দুক হামলায় একজন বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ৪ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনা শেষে বন্দুকধারী হামলাকারী আত্মহত্যা করেছেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

বার্তাসংস্থাটি জানায়, নিউইয়র্ক শহরের পার্ক এভিনিউর একটি অফিস ভবনে স্থানীয় সময় সোমবার বন্দুকধারীর গুলিতে চারজন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৩৬ বছর বয়সী দিদারুল ইসলাম নামে একজন নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের ছুটিতে থাকা কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। এই ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলার পর বন্দুকধারী নিজেই আত্মহত্যা করেন।

নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে তিন বছর ছয় মাস ধরে কর্মরত ছিলেন। তার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা এবং তাদের দুটি ছোট সন্তান রয়েছে। নিউইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ দিদারুলকে ‘একজন বীর’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, “তিনি যেমন বেঁচেছেন, তেমনই বিদায় নিয়েছেন— একজন বীরের মতো।”

পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকধারীর নাম শেন তামুরা, তিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা এবং তার মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পূর্ব ইতিহাস রয়েছে। তবে কী কারণে তিনি এই হামলা চালিয়েছেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস এই ঘটনাকে মর্মান্তিক উল্লেখ করে বলেন, “পাঁচজন নিরপরাধ মানুষকে গুলি করা হয়েছে।”

নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি পার্ক করা একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে নেমে এম৪ রাইফেল হাতে নিয়ে ভবনের দিকে এগিয়ে যায়। ভবনে ঢুকেই সে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর গুলি চালায় এবং আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করা এক নারীকে গুলি করে। এরপর লবিতে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে থাকে। পুলিশ আরও জানায়, বন্দুকধারী পরে এলিভেটরের দিকে যায় এবং নিরাপত্তা ডেস্কের পেছনে লুকিয়ে থাকা এক নিরাপত্তাকর্মী ও লবিতে থাকা আরও একজনকে গুলি করে। এরপর সে ভবনের ৩৩ তলায় উঠে একটি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানে গিয়ে একজনকে গুলি করে হত্যা করে এবং পরে নিজেই গুলি করে আত্মহত্যা করে। বন্দুকধারীর গাড়ি থেকে একটি রাইফেল কেস, একটি রিভলভার, গুলি ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে।

ঘটনার পর স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ওই অফিস ভবনে উপস্থিত হন। ভবনটিতে দেশের শীর্ষ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ন্যাশনাল ফুটবল লিগের (এনএফএল) অফিস রয়েছে।

এ ঘটনার পর শহরের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ ওই এলাকায় যানজট, রাস্তা বন্ধ ও গণপরিবহন বিঘ্নের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে। উল্লেখ্য, চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত নিউইয়র্কে গুলি সংক্রান্ত সহিংসতা ও খুনের হার গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম ছিল বলে জানিয়েছে এপি।