বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

হাসিনা ও তার দোসররা যুদ্ধাপরাধ করেছে: আইন উপদেষ্টা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৫:০১ পিএম

হাসিনা ও তার দোসররা যুদ্ধাপরাধ করেছে: আইন উপদেষ্টা

ছবি- সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল মন্তব্য করেছেন যে, "শেখ হাসিনা এবং তার দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, সেরকম জঘন্য অপরাধ ১৯৭১ সালেও পাকিস্তানি বাহিনীও করেনি।"

তিনি বলেছেন, "লাশ পুড়িয়ে ফেলা, আহত মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা, আনআর্মস (নিরস্ত্র) আহত মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা তো যুদ্ধাপরাধ।"

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনিস্টিটিউটের মিলনায়তনে ‘জুলাই গণহত্যার বিচার আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন’ অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, "আপনারা বলতে পারেন, এরকম তো ২৫ মার্চ কালো রাত্রে ঘটেছে। অবশ্যই ২৫ মার্চে কালো রাত্রে ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ওটা তো অন্য দেশের বাহিনী, আমরা স্বাধীনতা ঘোষণা করেছি, তারপর মানে আপনি যদি পাসপেক্টিভ দেখেন, পাসপেক্টিভ ওয়াইজ ডিফারেন্ট। আমার ৭১ সালে ডেড বডি পুড়িয়ে ফেলেছে, এরকম কোনো ফুটেজ আমি দেখি নাই। একজন গুলি খেয়েছে তাকে ধরে পিছু নিয়ে যাচ্ছে তার বন্ধু, সে অবস্থাকে গুলি করেছে এরকম কোনো ফুটেজ, কোনো বর্ণনা আমি মুক্তিযোদ্ধার বর্ণনায় পাই নাই। অন্যরকম নৃশংস থাকতে পারে, কিন্তু এরকম (জুলাই-আগস্ট গণহত্যা) নৃশংসতার গল্প পাই নাই।"

আইন উপদেষ্টা বলেন, "আপনারা বিভিন্ন প্রত্যাশার কথা, বেদনার কথা বলেন, মাঝে মাঝে একটু দুঃখ লাগে। আজকে তাজুল (চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম) কিছু কথা বলল যে আমরা কীভাবে কাজ করি। আমি আপনাদের বলতে পারি, তাজুল কীভাবে কাজ করে। তাজুল রাত ২টা পর্যন্ত কাজ করে, একটা নতুন কিছু হলে চকচকে চেহারা করে আইন মন্ত্রণালয়ে দৌড়া আসে, স্যার ওরকম একটা এভিডেন্স পেয়েছি। এই যে ইমোশন, এই যে পরিশ্রম, এই যে কষ্ট এই পুরা টিম করছে। আমরা লেগে আছি।"

ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, "তাজুলের সঙ্গে দেখা হলে প্রথম কথা, আমরা নিজের কাছে নিজে মুখ দেখাতে পারবো না, আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারবো না। বারবার একটা কথাই বলি, বিচার কত ভালোভাবে করা যায়, কতটুকু করা যায়। তারপরও অনেক অভিযোগ শুনি, অনেক কিছু শুনি, খুব দুঃখ লাগে মাঝে মাঝে।"

আইন উপদেষ্টা দৃঢ়ভাবে বলেন, "এটার জন্যই তো আমাদের সন্তানরা প্রাণ দিয়েছিল, আপনারা আমাদের প্রশ্ন করবেন, সমালোচনা করবেন। কষ্ট লাগলো, শুনবো আবার রিফোকাস করবো। কিন্তু আপনাদের একটা জিনিস বলতে চাই, আমি একজন রিলিজিয়াস মানুষ। আমি যখন নামাজ পড়ি বা যখন আমি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, সবসময় বলি আমি যেন আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারি। আমি যখন জায়নামাজে যাই, দোয়া পড়ি তখন মনে হয় যে আল্লাহ তো আমাকে দেখছে। আমি কি আল্লাহর কাছে জবাব দিতে পারবো? উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আপনাদের কনফিডেন্টলি বলে যাই, ওপরে আল্লাহ আছে। অবশ্যই পারবো।"