সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষিপ্ত হলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১, ২০২৫, ০৯:১১ পিএম

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষিপ্ত হলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী

ছবি- সংগৃহীত

অভিবাসন ইস্যু ইউরোপের দেশগুলোর জন্য একটি বড় রাজনৈতিক এবং মানবিক চ্যালেঞ্জ। ইতালির মতো দেশগুলো অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে আলবেনিয়ার সঙ্গে করা চুক্তি অন্যতম। এই চুক্তির বৈধতা নিয়ে অনেক দিন ধরেই প্রশ্ন উঠছিল। সম্প্রতি, দুই বাংলাদেশি অভিবাসীর একটি মামলার রায়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালত ইতালির এই নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতিতে একটি নতুন মোড় তৈরি করেছে। এই রায় ইতালির অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং ইইউর সঙ্গে ইতালির সম্পর্কের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

সাগরপাড়ি দিয়ে ইউরোপের দেশ ইতালিতে যাওয়ার চেষ্টা করেন দুই বাংলাদেশি। এ সময় তাদের ইতালির নিরাপত্তারক্ষীরা সাগর থেকে উদ্ধার করে। তবে তাদের ইতালিতে না রেখে পাঠানো হয় আলবেনিয়ায়। সেখান থেকেই তাদের আশ্রয়ের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ এবং তাদের আবেদন বাতিল করা হয়।

তবে আশ্রয় আবেদন বাতিলের বিষয়টির বিরুদ্ধে ইতালির আদালতে মামলা করেন ওই দুই বাংলাদেশি। এরপর তাদের মামলাটি পাঠানো হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতে।

এ মামলার প্রেক্ষিতে ইইউর সর্বোচ্চ আদালত আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) রায় দিয়েছেন, ইতালি কোনো অভিবাসন প্রত্যাশীকে আলবেনিয়ার বন্দিশিবিরে পাঠাতে পারবে না। বাংলাদেশিদের মামলার পক্ষে রায় দেওয়ার পর এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।

তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “আবারও, এই বিচার ব্যবস্থা, এবার ইউরোপিয়ান পর্যায়ে, নিজেদের বিচারাধিকার দাবি করছে, যেখানে যা তাদের নেই। এ রায়ের বিরুদ্ধে সবদিক দিয়ে কাজ করব আমরা।”

এদিকে ইতালি ২০২৩ সালে আলবেনিয়ার সাথে একটি চুক্তি করে। এ চুক্তি অনুযায়ী আলবেনিয়ায় বন্দিশিবির তৈরি করা হয়। যেখানে ইতালিতে আসা অভিবাসন প্রত্যাশীদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়। মূলত ইতালির চোখে যেসব দেশ ‘নিরাপদ’ সেসব দেশের মানুষ যদি অবৈধভাবে বা সাগরপাড়ি দিয়ে আসেন এবং রাজনৈতিক আশ্রয় চান, তাহলে তাদের ইতালিতে না রেখে আলবেনিয়ায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এরপর সেখানেই তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়। যদি কেউ আশ্রয় পান তাহলে তিনি ইতালিতে আসতে পারবেন।

২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ইতালি তাদের ‘নিরাপদ দেশের’ তালিকা আপডেট করে। সেখানে বাংলাদেশ, মিসরসহ আরও কয়েকটি দেশকে যুক্ত করা হয়। যেহেতু বাংলাদেশকে ইতালি ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে বিবেচনা করে তাই বাংলাদেশি কেউ অবৈধভাবে ইতালিতে গিয়ে আশ্রয় চাইলে বা সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালিতে ঢোকার চেষ্টাকালে উদ্ধার হলে তাদের আলবেনিয়ার সেই বন্দিশিবিরে পাঠিয়ে দেয় দেশটি।

বাংলাদেশকে যে ইতালি ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে অভিহিত করেছে সেটিরও নিন্দা জানিয়েছে ইইউর সর্বোচ্চ আদালত। আদালত বলেছেন, কোনো দেশ চাইলেই অন্য কোনো দেশকে ‘নিরাপদ’ হিসেবে ঘোষণা দিতে পারে না। এজন্য বিচারিক প্রক্রিয়া এবং যথেষ্ট প্রমাণ লাগবে।