সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা, পারমাণবিক সাবমেরিন শক্তিতে কে এগিয়ে?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২, ২০২৫, ০৪:২৭ পিএম

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা, পারমাণবিক সাবমেরিন শক্তিতে কে এগিয়ে?

সংগৃহীত ( প্রতীকি ছবি )

রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা বিদ্যমান। সম্প্রতি সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের কিছু মন্তব্য এই উত্তেজনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক সাবমেরিনের অবস্থান পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছেন, যা বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের পারমাণবিক সাবমেরিন বহরের তুলনামূলক বিশ্লেষণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে গিয়ে এবার দুইটি পারমাণবিক সাবমেরিনের অবস্থান বদলের নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যকে 'উসকানিমূলক' আখ্যা দিয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ আগস্ট) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, "সপ্তাহজুড়ে মেদভেদেভ যেসব উসকানিমূলক কথা বলেছেন, তার জবাবে সাবমেরিন দুটির নতুন অবস্থান নির্ধারণ করা হয়েছে।"

ক্রেমলিন এ নিয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে রুশ পার্লামেন্টের সদস্য ভিক্টর ভোডোলাটস্কি পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, "বিশ্বের বিভিন্ন মহাসাগরে আমাদের আরো পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে। প্রয়োজনে তারাও সক্রিয় হবে।"

এই উত্তেজনার মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে, গভীর সমুদ্রে পারমাণবিক সক্ষমতার দিক থেকে কে এগিয়ে—রাশিয়া নাকি যুক্তরাষ্ট্র? চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সাবমেরিন বহরের সক্ষমতা:

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে বর্তমানে অন্তত ৫১টি পারমাণবিক সাবমেরিন রয়েছে। এর মধ্যে ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন (এসএসবিএন) ওহাইও-শ্রেণির ‘বুমার’ নামে পরিচিত। এই সাবমেরিনগুলোর মূল শক্তি হলো নিঃশব্দে চলাচল এবং নির্ভুল পারমাণবিক হামলার ক্ষমতা। প্রতিটি সাবমেরিনে ২০টি ট্রাইডেন্ট-২ ডি ৫ ক্ষেপণাস্ত্র বহনের সক্ষমতা রয়েছে।

তিন ধরনের আক্রমণাত্মক পারমাণবিক সাবমেরিন (এসএসএন) রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে—ভার্জিনিয়া-ক্লাস, সিউলফ-ক্লাস এবং লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস। এগুলো শত্রুপক্ষের জাহাজ খুঁজে বের করে ধ্বংস করতে বিশেষভাবে তৈরি। এই সাবমেরিনগুলোতে টোমাহক, হারপুন মিসাইল এবং এমকে-৪৮ টর্পেডো থাকে।

বর্তমানে সবচেয়ে আধুনিক ভার্জিনিয়া-ক্লাসের ২৪টি সাবমেরিন যুক্তরাষ্ট্রের বহরে রয়েছে। ইউএসএস হাওয়াই, ইউএসএস মিসৌরি, ইউএসএস নর্থ ক্যারোলাইনা এর মধ্যে অন্যতম। এই সিরিজের সাবমেরিনে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সুযোগও রয়েছে।

এছাড়া তিনটি সিউলফ-ক্লাস সাবমেরিন রয়েছে, যেগুলো নিঃশব্দে গভীর পানিতে অভিযান পরিচালনায় পারদর্শী। পাশাপাশি অন্তত ২৪টি লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস সাবমেরিন এখনো সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

রাশিয়ার নৌবাহিনীর সাবমেরিন বহরের সংখ্যা প্রায় ৬৪টি। এর মধ্যে ১৪টি ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন (এসএসবিএন), যা রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক শক্তির অন্যতম ভিত্তি। সবচেয়ে আধুনিক বোরেই-ক্লাস সাবমেরিন রয়েছে ৮টি। এসব সাবমেরিনে ১৬টি বুলাভা মিসাইল ও ছয়টি টর্পেডো লঞ্চার রয়েছে। নাবিকের সংখ্যা একেকটিতে শতাধিক।

আক্রমণাত্মক পারমাণবিক সাবমেরিনের দিক থেকে ইয়াসেন-ক্লাস রাশিয়ার সবচেয়ে আধুনিক। বর্তমানে চারটি ইয়াসেন-ক্লাস সাবমেরিন রয়েছে। এতে সমুদ্র ও স্থল উভয় লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম ক্যালিবার বা পি-৮০০ অনিক্স ক্ষেপণাস্ত্র বহন করা যায়।

পাশাপাশি আকুলা-ক্লাসের পাঁচটি সাবমেরিন রয়েছে, যেগুলো মার্কিন লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাসের জবাব হিসেবে তৈরি। এগুলোতে টর্পেডোর পাশাপাশি বিভিন্ন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা যায়।

সূত্র: এনডিটিভি