আগস্ট ৩, ২০২৫, ১০:২৮ এএম
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন এবং হামাসের মধ্যকার দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের আবহে আন্তর্জাতিক মহলে বিভিন্ন ধরনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে। যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় ত্রাণ সরবরাহের মতো বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন দেশ মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে। এই আলোচনার এক পর্যায়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি দাবি করেন যে, হামাস অস্ত্র ত্যাগে সম্মত হয়েছে। এই খবরটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে হামাস এই দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস অস্ত্র ত্যাগের বিষয়ে মার্কিন দূতের দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। শনিবার (২ আগস্ট) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাস স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাবে। এই ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ইসরায়েলি গণমাধ্যম হারেৎজ-কে জানান, গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার সময় হামাস ‘অস্ত্রত্যাগের জন্য প্রস্তুত’ বলে সম্মতি দিয়েছে। উইটকফ এই দাবি ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠকের সময়েও করেন। তার এই মন্তব্যের পরই হামাস দ্রুত একটি বিবৃতি দিয়ে এর প্রতিবাদ জানায়।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, “যতক্ষণ পর্যন্ত ইসরায়েলি দখলদারিত্ব অব্যাহত থাকবে, ততদিন পর্যন্ত সশস্ত্র প্রতিরোধ জাতীয় ও বৈধ হিসেবে থাকবে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “যতদিন ফিলিস্তিনিদের জাতীয় অধিকার পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত না হবে এবং পূর্ণ সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র, যেটির রাজধানী হবে জেরুজালেম, প্রতিষ্ঠিত না হয়, ততদিন পর্যন্ত সশস্ত্র লড়াই থামানো হবে না।”
এই ঘটনার একদিন আগে উইটকফ গাজায় বিতর্কিত জিএইচএফ পরিচালিত মার্কিন ও ইসরায়েল-সমর্থিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। হামাস এই সফরকে ‘পরিকল্পিত প্রদর্শনী’ হিসেবে নিন্দা জানায় এবং অভিযোগ করে যে, জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই ছিল এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।
হামাসের এই অবস্থান এমন এক সময়ে এলো, যখন ফ্রান্স ও কানাডাসহ একাধিক পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। যুক্তরাজ্যও জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারাও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। তবে হামাসের এই কঠোর অবস্থান নতুন করে আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।