আগস্ট ৫, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম
দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত মধ্যম পাল্লার পরমাণু অস্ত্র (আইএনএফ) চুক্তি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে দাঁড়াল রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তারা আর মধ্যম ও স্বল্পপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন সংক্রান্ত কোনো সীমাবদ্ধতা মানবে না। রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পদক্ষেপের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক কর্মকাণ্ডকে দায়ী করেছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইউরোপ এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের একতরফা নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখার আর কোনো অর্থ নেই।" মস্কো মনে করছে, পশ্চিমাদের এই তৎপরতা রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।
এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াচ্ছিলেন। সম্প্রতি ট্রাম্প রাশিয়ার কাছাকাছি দুটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার কয়েক দিন পরই রাশিয়া এই পদক্ষেপ নিল। রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভও তার এক্স হ্যান্ডলে (পূর্বে টুইটার) এই সিদ্ধান্তের জন্য ন্যাটো দেশগুলোকে দায়ী করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, মস্কো এর প্রতিক্রিয়ায় আরও পদক্ষেপ নেবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এই পরিস্থিতিকে 'বহুপাক্ষিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা'র সূচনা হিসেবে দেখছেন। যেখানে দেশগুলো নিরস্ত্রীকরণের বদলে পুনরায় অস্ত্র মজুত ও মোতায়েনের দিকে ঝুঁকছে। তাদের মতে, এটি একটি নতুন ঠাণ্ডা যুদ্ধের ইঙ্গিত, যেখানে সামরিক প্রযুক্তি, অস্ত্র মজুত এবং প্রতিদ্বন্দী শক্তির মধ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই চুক্তি ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।