সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

ক্রেমলিনে পুতিন-উইটকফ বৈঠক, বাড়ছে যুদ্ধবিরতির চাপ

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ৬, ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম

ক্রেমলিনে পুতিন-উইটকফ বৈঠক, বাড়ছে যুদ্ধবিরতির চাপ

ছবি- সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইউক্রেনের প্রতি তার সমর্থন জোরদার করেছেন এবং মস্কোর ওপর চাপ বাড়াতে নতুন করে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের একজন বিশেষ দূত মস্কো সফর করছেন এবং ক্রেমলিনে সরাসরি বৈঠক করেছেন, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তীব্র টানাপড়েনের মাঝে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। বুধবার তিনি মস্কোর ক্রেমলিনে পৌঁছান। এই বৈঠককে ঘিরে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে নতুন করে কূটনৈতিক চাপ তৈরি হয়েছে।


ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য মস্কোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়সীমার আগে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে আলোচনার জন্যই বুধবার মস্কো সফরে গেছেন উইটকফ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, ইউক্রেনের সঙ্গে 'ভয়াবহ যুদ্ধ' বন্ধে পদক্ষেপ না নিলে রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। একই সঙ্গে, যেসব দেশ এখনো রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের ওপরও 'সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা' আরোপ করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পের এই হুমকিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া কেবল তখনই শান্তির ব্যাপারে গুরুত্ব দেবে, যখন তারা অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে।

তবে আগামী শুক্রবারের মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা এখনো ক্ষীণ। কারণ ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যাপক আকারে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে তিন দফার আলোচনায় যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। মস্কোর সামরিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন শর্ত কিয়েভ ও তার পশ্চিমা মিত্ররা মেনে নেয়নি। এছাড়া পুতিন ও জেলেনস্কির মাঝে সরাসরি বৈঠকের জন্য কিয়েভ একাধিকবার আহ্বান জানালেও ক্রেমলিন তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের পর ইউক্রেনে অতিরিক্ত ২০০ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও ড্রোন উৎপাদন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বর্তমানে ড্রোন ব্যবহার করে ইউক্রেন রাশিয়ার তেল শোধনাগার ও জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। আর ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে বড় ধরনের পাল্টা হামলা করছে মস্কো।

কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসন জানিয়েছে, গত সপ্তাহে কিয়েভে রুশ বাহিনীর হামলায় আহত এক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে। ফলে এ নিয়ে গত কয়েক দিনে কিয়েভে রাশিয়ার নতুন হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে পৌঁছেছে। রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর কিয়েভে এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা বলে দাবি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।