আগস্ট ২, ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সংবিধান সংশোধন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার রূপরেখা নিয়ে চলমান বিতর্ক দীর্ঘদিনের। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংবিধানের পরিবর্তন বা সংস্কারের বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি এবং এর আইনি ও গণতান্ত্রিক বৈধতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে, বিশেষত যখন দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। বিএনপির পক্ষ থেকে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে তাদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান স্পষ্ট করা হয়েছে, যা বর্তমান রাজনৈতিক বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী মন্তব্য করেছেন, সংসদের বাইরে সংবিধান সংশোধনের কোনো সুযোগ নেই। সংবিধানের যেকোনো পরিবর্তন অবশ্যই সংসদের ভেতরেই করতে হবে। শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নীলক্ষেতের আইসিএমএবি মিলনায়তনে বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমির খসরু বলেন, "সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারগুলো এখনো আলোচনা হচ্ছে। সংবিধানের যদি কোনো সংশোধন করতে হয় তাহলে সেটা সংসদের মধ্যে থেকে করতে হবে। সেটার জন্য ম্যান্ডেট জনগণের থেকে নিতে হবে প্রত্যেকটি দলকে। সেটি হতে হবে সংসদের মধ্যে।" তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, স্বচ্ছতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো পরিবর্তন আনতে হলে তা সংসদের বাইরে করার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপি নেতা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তকারীদের সমালোচনা করে বলেন, "যারা বাংলাদেশের আগামীর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা সংসদীয় পদ্ধতিতেও বিশ্বাস করে না। তারা কোন পদ্ধতিতে যাবে নিজেরাও জানে না।"
বিদ্যমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন জরুরি মন্তব্য করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "আমরা যতই সংস্কার করি, কোনো লাভ হবে না, যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলাতে না পারি, কোনো সংস্কার কাজে আসবে না। অপরের মতকে আমাদের সম্মান জানাতে হবে। সহনশীল হতে হবে। এর মাধ্যমেই দেশকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। দেশের জাতীয় স্বার্থে যেখানে ঐক্য দরকার, সেখানে ঐক্য করতে হবে।"
দলগুলোর মধ্যে ঐক্য এখনো অটুট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, "অনেকেই বলছেন, দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ছিল ৫ আগস্টের পরে তা অনৈক্য হয়ে গেছে। আমি তো কোনো অনৈক্য দেখতে পাচ্ছি না।" তিনি আরও যোগ করেন, প্রত্যেকটি দলের নিজস্ব দর্শন ও চিন্তাভাবনা থাকবে, কিন্তু যেখানে ঐকমত্য হবে সেখানে একমত হতে হবে। বাকিটা জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে, কারণ জনগণই মালিক এবং তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংসদে পাশ করতে হবে।