সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

কুড়িগ্রামে বৃষ্টির অভাবে পাট চাষিরা বিপাকে

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১, ২০২৫, ০৪:১১ পিএম

কুড়িগ্রামে বৃষ্টির অভাবে পাট চাষিরা বিপাকে

ছবি- সংগৃহীত

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী থাকা সত্ত্বেও এবার বর্ষা মৌসুম শেষের পথে হলেও এখনো দেখা মেলেনি বন্যার। আর কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার পাট চাষিরা। বৃষ্টির ঘাটতির কারণে খাল-বিল শুকিয়ে গেছে, ফলে কোথাও পানি নেই। এতে জমিতে কাটা পাট পঁচানো যাচ্ছে না এবং মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছে কৃষকের কষ্টের ফল সোনালি আঁশ

সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি এলাকার চাষি সোলায়মান আলী জানান, "এই বর্ষাতেও বৃষ্টির দেখা নেই। ৪০ শতকে পাট চাষ করেছি, কিন্তু পানি না থাকায় কাটতে পারছি না। জমিতে আমন চারা লাগানোর সময় হয়ে যাচ্ছে, অথচ পাটই তুলতে পারছি না।"

একই উপজেলার ফজলুল হক বলেন, "পানি তো নেই, দূরে কোথাও নিয়ে পাট পঁচাতে হবে। কিন্তু একেকটা পাটের আঁটি ঘোড়ার গাড়িতে নিয়ে যেতে ৪-৫ টাকা করে লাগছে। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে, লাভ তো দূরের কথা, উল্টো লোকসান হবে।" পাঁচগাছী ইউনিয়নের কৃষক নুর আলম জানান, "আমার দুই বিঘার পাট কেটে জমিতেই রেখে দিয়েছি। গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু পানি না থাকায় জাগ (পঁচাতে) দিতে পারছি না।"

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কুড়িগ্রামে ১৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমির পাট কাটা হয়েছে। গত বছর এ জেলায় ১৭ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছিল।

আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, জুলাই মাসে সাধারণত যেখানে ৪০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা, সেখানে এ বছর তা হয়নি। ফলে কৃষি উৎপাদনের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়েছে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, "পাট কর্তন শুরু হয়েছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চাষিরা পাট পঁচাতে পারছেন না। যদি আগামী দিনেও বৃষ্টি না হয়, তাহলে বিকল্প উপায়ে পাট পঁচানোর জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হবে।"