আগস্ট ১৯, ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ চারজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত রোববার (১৭ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন আজ তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে।
অসুস্থ হয়ে পড়লেও অনশনে অনড় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে না, ততক্ষণ তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসায় অনশনকারীদের ক্ষোভ আরও বাড়ছে। গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী এবং রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করলেও তারা তাদের দাবিতে অটল থাকেন।
বেরোবি প্রশাসন জানিয়েছে, তারা ছাত্র সংসদ গঠনের ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একমত। তবে বিদ্যমান 'বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন, ২০০৯'-এ ছাত্র সংসদের সংবিধি নেই। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে ছাত্র সংসদের নামে শিক্ষার্থীদের অর্থ সংরক্ষণের জন্য আলাদা ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে এবং একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে এ বছরের গত ১৪ মে ইউজিসিতে পাঠানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গঠনতন্ত্রটি বর্তমানে ইউজিসির বিশেষজ্ঞ কমিটির যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে। এরপর এটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। এর পরই নির্বাচন আয়োজনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব। উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী ইউজিসির বরাত দিয়ে শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন, আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে খসড়া নীতিমালা অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে অক্টোবরেই নির্বাচন আয়োজন করা হবে। তবে শিক্ষার্থীরা এই আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এই আন্দোলন কেবল বেরোবির সমস্যা নয়, এটি দেশের সারাদেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতির স্থবিরতা কাটিয়ে ওঠার আন্দোলনের একটি অংশ। এরই মধ্যে ঢাকায় শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা এই আন্দোলনের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলেছে।