জুলাই ১৯, ২০২৫, ১২:৫৭ এএম
দিনাজপুর জেলায় এক বিশাল কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে আগামী ৪ঠা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ (১৯ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ) তারিখে একযোগে ৮ লক্ষ বৃক্ষের চারা রোপণ করা হবে। এই মহৎ উদ্যোগটি জেলার ১০৩টি ইউনিয়ন এবং ৯টি পৌরসভায় সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পরিচালিত হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় এবং একটি সবুজ ও পরিচ্ছন্ন দিনাজপুর গড়ার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের এই পরিকল্পনা ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
দিনাজপুরবাসীকে এই সবুজায়ন কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক। তার বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, "আশাকরি, আপনার ইউনিয়ন / পৌরসভায় সংযুক্ত হয়ে আপনার বরকতের হাত দিয়ে আপনিও একটি চারা গাছ রোপন করবেন।" এই আহ্বানের মধ্য দিয়ে প্রতিটি নাগরিককে পরিবেশ সুরক্ষার এই মহৎ উদ্যোগে অংশীদার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে, যা সমাজের সকল স্তরে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক তার বার্তায় আরও বলেন, "আসুন, সবুজ ও পরিচ্ছন্ন দিনাজপুর গড়তে আমরা সকলে শরীক হই।" এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য শুধু বৃক্ষরোপণ নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদী সবুজায়ন প্রক্রিয়ার সূচনা করা, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ও টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করবে।
এই বিপুল সংখ্যক চারা রোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে দিনাজপুর জেলায় বনায়ন বৃদ্ধি পাবে, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বৃক্ষরাজি বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন নির্গত করে, যা বায়ুর গুণগত মান উন্নত করে। এছাড়াও, বৃক্ষরোপণ ভূমি ক্ষয় রোধে সাহায্য করে এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও সহায়ক হয়।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই ধরনের গণমুখী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিবেশগত সুবিধার পাশাপাশি সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় পর্যায়ে মানুষকে সংগঠিত করে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত করা সম্ভব হলে তা কমিউনিটি বন্ডিং এবং নাগরিক দায়িত্ববোধ বাড়াতে সাহায্য করে।
গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং বন উজাড়ের ফলে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দিনাজপুরের এই ৮ লক্ষ চারা রোপণ কর্মসূচি একটি অনুপ্রেরণামূলক পদক্ষেপ, যা অন্যান্য জেলাকেও অনুরূপ উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করতে পারে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের এই একযোগে ৮ লক্ষ বৃক্ষের চারা রোপণ কর্মসূচি নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এটি শুধু পরিবেশগতভাবে নয়, সামাজিকভাবেও একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে। এই কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন দিনাজপুরকে একটি সবুজ ও পরিচ্ছন্ন জেলা হিসেবে গড়ে তোলার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করবে। এখন প্রয়োজন এই রোপিত চারাগুলোর সঠিক পরিচর্যা এবং নাগরিকদের দীর্ঘমেয়াদী সম্পৃক্ততা, যাতে এই সবুজ উদ্যোগের সুফল প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে যায়।
আপনার মতামত লিখুন: