জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন ও ভয়ংকর বোমা ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে, যা বিশেষত শিশুদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। সম্প্রতি নিহত শিশুদের সুরতহাল (পোস্টমর্টেম) করার সময় স্থানীয় চিকিৎসক দল এই চাঞ্চল্যকর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এই অভিযোগ যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, শুক্রবার (১৮ জুলাই) ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজাজুড়ে কমপক্ষে ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ ও বোমাবর্ষণ কবলিত উপত্যকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার করুণ দশা বর্ণনাতীত। প্রতিদিনের বিপুল সংখ্যক আহতদের চাপে চিকিৎসকরা বাধ্য হচ্ছেন বাছাই করে চিকিৎসা দিতে, যা মানবিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
শুক্রবার সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডের মধ্যে পূর্ব গাজা শহরের তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। উত্তর গাজার জাবালিয়া আন-নাজলায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর আগে দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় বড় ধরনের আগুন লেগেছে এবং শিশুসহ কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আল-মাওয়াসিতে বারবার মারাত্মক ইসরায়েলি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে, যা বেসামরিক নাগরিকদের জন্য চরম উদ্বেগের কারণ। মরিয়া হয়ে সাহায্যের সন্ধানে থাকা সাতজনকেও হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
আল জাজিরার সংবাদদাতা হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, শিশুসহ আহতদের নাসের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং কিছু কিছু ক্ষত ড্রোন হামলার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, “ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে পেরেক, ধাতু এবং ধারাল পদার্থ থাকে। যা বিস্ফোরণের পর তীব্রগতিতে ছড়িয়ে পড়ে আঘাত হানে। ফলে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত হয়।”
মাহমুদ আরও যোগ করেন, “এই আক্রমণগুলো ক্রমবর্ধমান এবং বিশাল জনসমাগম, বাজারে বা পানির জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের লক্ষ্য করে করা হচ্ছে।” তিনি উল্লেখ করেন, "ইসরায়েল ভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করার দাবি করছে। আমরা যখন মাটিতে তাকাই, তখন আমরা দেখতে পাই যে হতাহতের সংখ্যা ইসরায়েলের কথার বিপরীত।"
এই ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ হতে পারে এবং এটি যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আপনার মতামত লিখুন: