শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের যাত্রা শুরু, চুক্তি সই

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ১৮, ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম

ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয়ের যাত্রা শুরু, চুক্তি সই

বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয়। মানবাধিকার সুরক্ষা ও কারিগরি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ৩ বছরের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

জাতীয় ডেস্ক: বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির সুরক্ষা, পর্যবেক্ষণ এবং উন্নয়নে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (OHCHR)। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের মধ্যে তিন বছর মেয়াদি একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই, ২০২৫) জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সমঝোতা স্মারকটিতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং জাতিসংঘের পক্ষে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক স্বাক্ষর করেন।

এর আগে, গত ১০ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় স্থাপনের খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। এই অনুমোদনের ভিত্তিতেই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলো।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মিশনের মূল লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা এবং এর উন্নয়নে সরকারকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা। সংস্থাটি মানবাধিকার সুরক্ষা ও সংস্কার এগিয়ে নিতে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার কর্মী এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।

বিশেষ করে, গত বছরের আগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো অনুসন্ধানে গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নেও এই নতুন কার্যালয় সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক। তিনি বলেন, "এই চুক্তি আমাদের দপ্তরকে তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে আরও কার্যকরভাবে সহায়তা করতে সক্ষম করবে।

নতুন এই কার্যালয় বাংলাদেশে মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে। এটি সরকারের সঙ্গে মানবাধিকার সংলাপে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যা দেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই উদ্যোগকে বাংলাদেশের মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এর মাধ্যমে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করার একটি প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ তৈরি হলো এবং ভবিষ্যতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিরোধে এটি একটি কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে।