বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় ত্রাণ বিতরণে ইসরায়েলের ওপরই ভরসা ট্রাম্পের

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ৩০, ২০২৫, ১২:০০ পিএম

গাজায় ত্রাণ বিতরণে ইসরায়েলের ওপরই ভরসা ট্রাম্পের

ছবি- সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, গাজায় খাবার বিতরণ কেন্দ্রগুলো ইসরায়েলই পরিচালনা করবে। গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন। সমালোচকেরা বলছেন, এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলে গাজায় ইসরায়েলি দখলদারি আরও দৃঢ় হবে ও ত্রাণপ্রত্যাশীদের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন হবে।

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস গাজায় বিতরণ করা খাদ্যসহায়তা চুরি করে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে ইসরায়েল। গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এ অভিযোগকেই নতুন করে সামনে আনেন। বলেন, "হামাস গাজায় বিতরণ করা খাদ্যসহায়তা চুরি করে।"

তবে বিভিন্ন মানবিক সহায়তা সংস্থা ও জাতিসংঘ কর্মকর্তারা আগেই ইসরায়েলের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এমনকি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ইসরায়েলি কর্মকর্তাও সংবাদমাধ্যমগুলোকে বলেছেন, খাদ্যসহায়তা হামাসের কাছে পৌঁছাচ্ছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

কোথায় ও কখন এ কেন্দ্রগুলো তৈরি হবে, সেটা নিশ্চিত নয়। ইসরায়েল সেগুলো সরাসরি চালাবে, নাকি জিএইচএফ নামের ত্রাণ সংস্থার মাধ্যমে পরিচালনা করবে, তা–ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল–সমর্থিত বিতর্কিত সংস্থা জিএইচএফের বিরুদ্ধে গাজায় অনিরাপদ কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ আছে।

গতকাল এয়ারফোর্স ওয়ানে বসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, "অনেক কিছুই চুরি হয়ে গেছে। তারা টাকা পাঠায়, খাবার পাঠায়। আর হামাস সেগুলো চুরি করে। এ এক ছলচাতুরীর খেলা।"

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণ বিতরণকে ইসরায়েল যেভাবে সামলাচ্ছে, সে ব্যাপারে তিনি আস্থা রাখেন। যদিও এ কার্যক্রম এতটা বিশৃঙ্খল যে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছেন ইসরায়েলি সেনারা।

 

ট্রাম্পের বক্তব্য ও উদ্বেগের কারণ

 

ট্রাম্প বলেন, "আমরা (নতুন বিতরণকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায়) ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করতে চলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, তারা এটাকে ভালোভাবে সামাল দেবে। তারা খাবার বিতরণকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করতে চায়, যেন খাবার যথাযথভাবে বিতরণ হয়।"

কোথায় ও কখন এসব কেন্দ্র তৈরি হবে, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ইসরায়েল সেগুলো সরাসরি চালাবে, নাকি জিএইচএফ নামের বিতর্কিত ত্রাণ সংস্থার মাধ্যমে পরিচালনা করবে, তা–ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল–সমর্থিত জিএইচএফের বিরুদ্ধে গাজায় অনিরাপদ কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ আছে।

ট্রাম্পের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, গাজায় জাতিসংঘ ও তাদের সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে আবারও ত্রাণসহায়তা বিতরণ শুরু করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনো প্রস্তুত নয়।

ইসরায়েল গত মে মাস থেকে গাজায় অবরোধ আরও কঠোর করেছে। এখন সেখানে শুধু জিএইচএফের মাধ্যমে কিছু খাদ্য ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে সংস্থাটির চারটি বিতরণকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছাতে বা সেখান থেকে বের হতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে কয়েক শ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েল দাবি করছে, গাজায় আসলে কোনো অনাহার বা দুর্ভিক্ষ নেই। এসব কথা হামাসের মিথ্যা প্রচারণা। অথচ বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সেখানে মানুষ না খেয়ে আছে। গাজার কঙ্কালসার শিশুদের ছবিও এখন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে দেখা যাচ্ছে।

গত সোমবার ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে গাজায় সত্যিই মানুষ না খেয়ে আছেন। তবে তিনি ইসরায়েলের কোনো সমালোচনা করেননি। বরং মঙ্গলবার তিনি আবারও বলেন, খাবার দেওয়ার দায়িত্ব ইসরায়েলের হাতেই থাকা উচিত।