জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
বৈধ পথে বিদেশে কর্মসংস্থান ও উন্নত জীবনের আশায় বিদেশগামী মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির অসাধু মানবপাচারকারী চক্র নিরীহ মানুষকে প্রতারিত করে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ পথে বিদেশে পাচার করে থাকে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলোতে উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার মতো বিপজ্জনক পথে অনেক বাংলাদেশি তিউনিসিয়া এবং লিবিয়ার মতো দেশগুলোতে আটকে পড়ছেন। সেখানে তারা নানা রকম দুর্ভোগ, অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এসব অসহায় অভিবাসীদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
তিউনিসিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থানরত ১৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে দেশে ফিরেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর সম্মিলিত সহযোগিতায় স্বেচ্ছায় দেশে প্রত্যাবাসনেচ্ছুক এই ১৯ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি নাগরিককে আজ সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ইকে-৫৮২ ফ্লাইট যোগে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে তিউনিসিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থান করছিলেন।
প্রত্যাবাসিত বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশের উদ্দেশ্যে মানবপাচারকারীদের প্ররোচনা ও সহযোগিতায় তিউনিসিয়ায় অনুপ্রবেশ করেছিলেন। সেখানে তাদের অনেকে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন। এই বিপদসংকুল যাত্রা তাদের জীবনে এক অমানবিক অভিজ্ঞতার জন্ম দিয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রত্যাবাসিতদের অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তারা। এসময় কর্মকর্তারা প্রত্যাবাসিতদের প্রতি অনুরোধ জানান, তাদের এই অমানবিক অভিজ্ঞতা যেন তারা সবার সাথে বিনিময় করেন, যাতে করে আর কোনো বাংলাদেশি অবৈধভাবে এই ভয়ংকর পথ পাড়ি দিয়ে তিউনিসিয়ায় বা অন্য কোনো দেশে যাওয়ার চেষ্টা না করেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসিত প্রত্যেককে ছয় হাজার টাকা, কিছু খাদ্যসামগ্রী, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিউনিসিয়ায় বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা নিবিড়ভাবে একসঙ্গে কাজ করছে। এটি মানবপাচার রোধে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন।
আপনার মতামত লিখুন: