রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

যাদের দোয়া আল্লাহ কখনো ফিরিয়ে দেন না, জেনে নিন

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৬:৩৯ পিএম

যাদের দোয়া আল্লাহ কখনো ফিরিয়ে দেন না, জেনে নিন

ছবি- সংগৃহীত

ইসলামে দোয়া বা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ইবাদতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, দোয়ার মাধ্যমে মানুষ তার ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে দোয়ার গুরুত্ব এবং কিছু বিশেষ সময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যখন দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এমন কিছু বিশেষ শ্রেণির মানুষও আছেন, যাদের দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না।

দোয়া হলো ইবাদতের মূল, যা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক হতে পারে। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, “দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না।” (তিরমিজি, হাদিস ২১৩৯)। আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের কাছে কিছু চাইলে খুশি হন এবং না চাইলে রাগ করেন, যেমনটি হাদিসে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তার ওপর রাগ হন।” (তিরমিজি, হাদিস)।

 

পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা নিজেই দোয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন, “তোমরা আমার কাছে দোয়া করো। আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব।” (সুরা মুমিন, আয়াত ৬০)। অন্য আয়াতে তিনি বলেন, “যখন আমার বান্দা আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করে, তখন বলে দিন- আমি বান্দার খুব কাছেই আছি। সে যখনই আমার কাছে দোয়া করে, আমি তার দোয়া কবুল করি।” (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৬)।

ইসলামী শরিয়তে দোয়া কবুলের কিছু বিশেষ সময় ও কিছু বিশেষ ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের দোয়া আল্লাহ তাআলা ফিরিয়ে দেন না। হাদিস অনুযায়ী এমন চারটি শ্রেণির মানুষ হলেন:

এক : রোগীর দোয়া রোগাক্রান্ত ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছে বিশেষ গ্রহণযোগ্য। নবীজি (সা.) বলেছেন, “যখন তোমরা কোনো রোগীর কাছে যাও বা তাকে দেখতে যাও, তখন তাকে বলো যেন সে তোমার জন্য দোয়া করে। কারণ, তার দোয়া ফেরেশতাদের দোয়ার মতো।” (সুনান তিরমিজি, হাদিস : ৩,৫৯৮)।

দুই : রোজাদারের দোয়া রোজাদারের দোয়া অত্যন্ত কার্যকর। নবী (সা.) বলেছেন, “রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময় ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১,৭৫৩)।

তিন : মা-বাবার দোয়া নবীজি (সা.) বলেছেন, “তিনজনের দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হয়। মজলুমের দোয়া, মুসাফিরের দোয়া ও পিতার সন্তানের জন্য দোয়া।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১,৯০৫)। এই হাদিস অনুযায়ী, মা-বাবার দোয়া সন্তানের জন্য অত্যন্ত ফলপ্রসূ।

চার : অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য দোয়া যখন কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করে, তখন সেই দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, “যখন কোনো মুসলিম তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দোয়া করে, তখন ফেরেশতা বলে, ‘আমিন, তোমার জন্যও তাই হোক।’” (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২,৭৩২)।

এই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায় যে, কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং কিছু বিশেষ ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ তাআলা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কবুল করেন।