জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
সড়কের বেহাল দশা জনদুর্ভোগের একটি বড় কারণ। যখন স্থানীয় প্রশাসন দীর্ঘকাল ধরে এই সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়, তখন সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করে। রংপুরের জাহাজ কোম্পানির মোড় থেকে মাহিগঞ্জ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে প্রতীকী জানাজা এবং পরে ধানের চারা রোপণের মাধ্যমে যে প্রতিবাদ জানিয়েছে, তা কর্তৃপক্ষের টনক নড়াতে একটি নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানির মোড় থেকে মাহিগঞ্জ সাতমাথা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত, যা চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই বেহাল সড়কের সংস্কার না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এবং অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি হিসেবে ভাঙাচোরা রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করেছেন।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরীর সাতমাথা রেলগেট এলাকায় এই কর্মসূচিতে অংশ নেন স্থানীয়রা। এসময় তারা রংপুর সিটি কর্পোরেশনকে (রসিক) ‘লাল কার্ড’ প্রদর্শন করেন। এর আগে গত ২০ জুলাই একই সড়কের বেহাল দশার প্রতিবাদে স্থানীয়রা সিটি কর্পোরেশনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা করেছিলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে জমে থাকা বৃষ্টির পানি দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে, আবার কোথাও কোথাও ধুলার কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রিকশা ও অটোরিকশা চালকরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এবং তাদের যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে।
আরাফাত হোসেন নামে একজন বলেন, "সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এমন বেহাল একটি সড়ক থাকতে পারে কেউ কল্পনা করতে পারবে না। হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়লেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।"
স্থানীয় বাসিন্দা রাজিমুজ্জামান হৃদয় বলেন, "দীর্ঘদিন থেকে বেহাল এই সড়ক সংস্কারের দাবিতে সিটি কর্পোরেশনকে মৃত ঘোষণা করে প্রথমে প্রতীকী জানাজা করেছি। ভয়াবহ অবস্থা বোঝাতে ভাঙা সড়কে ধান গাছ রোপণ করেছি এবং সিটি কর্পোরেশনকে লাল কার্ড প্রদর্শন করা হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহীদুল ইসলাম এবং প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতিমাকে অযোগ্য ঘোষণা করে তাদের প্রতি লাল কার্ড প্রদর্শন করা হয়।"
এ প্রসঙ্গে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা জানান, সড়কের ছোট-বড় গর্ত সংস্কারের কাজ আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে। তিনি আরও জানান, পুরো সিটি এলাকায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ভাঙাচোরা হয়ে গেছে এবং এর সংস্কারের জন্য ২১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন: