জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৭:২৩ পিএম
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন সরকার গঠনের পর থেকেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সংকট নিরসনের প্রচেষ্টা চলছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে মতামত নিচ্ছেন। এর ধারাবাহিকতায়, শনিবার বিকেলে ১৪ জন রাজনীতিবিদের সঙ্গে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ১৪ জন রাজনীতিবিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিকেল ৫টায় শুরু হওয়া এই বৈঠকটি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে। দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই আলোচনায় দেশের চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং জনগণের প্রত্যাশা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনীতিবিদরা হলেন– জাতীয় গণফ্রন্ট নেতা আমিনুল হক টিপু বিশ্বাস, ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার, নেজামে ইসলাম পার্টি মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ জাসদ নেতা ড. মুশতাক হোসেন, ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট নেতা ববি হাজ্জাজ, জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মার্কসবাদী- বাসদ সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মন্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।
বৈঠকের পর মোস্তফা জামাল হায়দার সাংবাদিকদের জানান, প্রধান উপদেষ্টা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের মতামত জানতে চেয়েছেন। তারা দেশের রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, তারা প্রধান উপদেষ্টাকে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া আরেক নেতা ববি হাজ্জাজ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা মনোযোগ সহকারে তাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং দেশের কল্যাণের জন্য সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ধরনের আলোচনার মাধ্যমে দেশে একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসবে।
প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ড. ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখবেন। এই বৈঠকের পর আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আলোচনাগুলো মূলত একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করার জন্য করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠকগুলো দেশের রাজনৈতিক সংকটের সমাধান এবং একটি নতুন রাজনৈতিক দিগন্তের সূচনা করতে সহায়ক হতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার এই উদ্যোগকে দেশের সকল মহলের কাছে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন: