জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের হাউলি কেউটিল গ্রামে এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে। এক যুবক ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে একটি প্রোফাইলের সঙ্গে, যিনি নিজেকে নারী পরিচয়ে পরিচিত করিয়েছিলেন ‘সামিয়া’ নামে। পরবর্তীতে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় সামাজিকভাবে, মৌলভি ডেকে পড়ানো হয় বিয়ের আকদ। কিন্তু বিয়ের দেড় মাস পর জানা যায়, ‘সামিয়া’ নামে যার সঙ্গে বিবাহ হয়েছে, তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন পুরুষ, যার নাম মো. শাহিনুর রহমান।
স্থানীয় সূত্র ও স্বামী মাহমুদুল হাসান শান্তর পরিবার জানায়, বিয়ের পর থেকেই কথিত স্ত্রী তার স্বামীকে কাছে ঘেঁষতে দিতেন না। বলতেন, “আমি অসুস্থ, ডাক্তার নিষেধ করেছেন ঘনিষ্ঠ হতে।” এই অজুহাতে দাম্পত্য সম্পর্ক এড়িয়ে যেতেন তিনি। এতে শান্তর মনে সন্দেহ তৈরি হয়। একপর্যায়ে পরিবারের লোকজন গত ২৫ জুলাই বিষয়টি জানতে পারেন এবং শান্তর স্ত্রী হিসেবে পরিচিত ‘সামিয়া’ যে আসলে একজন পুরুষ মানুষ—তা প্রকাশ পায়। তখন পরিবারের সবাই হতবাক হয়ে যান।
পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পরপরই শান্তর মা মোছা. সোহাগী বেগম সংবাদমাধ্যমকে জানান, “একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল। আমরা কোনোভাবেই বুঝতে পারিনি। সে অভিনয় করে আমাদের সবার মন জয় করে নিয়েছিল। সবটাই যে অভিনয় ছিল, তা আমরা বুঝতে পারিনি। তাকে আমরা সকালে বাড়ি থেকে বিদায় করে দিয়েছি।”
তদন্তে জানা গেছে, শাহিনুর রহমান ওরফে সামিয়া চট্টগ্রামের আমতলা ঈদগাহ বৌবাজার এলাকার বাসিন্দা এবং আবুল কাশেম নামের এক ব্যক্তির ছেলে। মোবাইল ফোনে গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগে তিনি বলেন, “আমি শান্তর সঙ্গে যা করেছি, সেটা অন্যায় করেছি। এটা করা আমার ঠিক হয়নি।” তিনি আরও জানান, তার হরমনজাতীয় শারীরিক সমস্যা রয়েছে এবং এই কারণে তিনি নিজেকে একজন মেয়ে ভাবতে ভালোবাসেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, “এ ঘটনা নিয়ে কেউ এখনো আমার কাছে আসেননি। তবে পরিষদের এক সদস্যের কাছ থেকে আমি ঘটনাটি শুনেছি।”
এদিকে এলাকাবাসীর মধ্যে ঘটনাটি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। ফেসবুক সম্পর্ক, আত্মপরিচয়ের জটিলতা এবং পারিবারিক পরিণতির এই ঘটনা নতুন করে সমাজে সচেতনতার প্রশ্ন তোলে।
আপনার মতামত লিখুন: