বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

আমরা সৎ শাসক ও কোরআনের শাসন চাই

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২২, ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

আমরা সৎ শাসক ও কোরআনের শাসন চাই

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, "বিগত দিনে আমরা অনেক শাসন দেখেছি। এগুলো শাসন ছিল না, ছিল শোষণ। আমরা সৎ শাসক চাই, কোরআনের শাসন চাই।" মঙ্গলবার (২২ জুলাই, ২০২৫) সকালে খুলনার দাকোপ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে স্থানীয় চালনা বিলালিয়া আলিম মাদ্রাসা ময়দানের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তার এই মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সৎ ও ন্যায়ভিত্তিক শাসনের ওপর জামায়াতের জোর দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

ডা. শফিকুর রহমান তার সাম্প্রতিক অসুস্থতার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "সেদিনই তো আমি চলেই গিয়েছিলাম। দ্বীনের পথে লড়তে চাই জীবনের শেষ পর্যন্ত। আর বিদায় নিতে চাই শহীদ হয়ে। রক্তের চাদর গায়ে দিয়ে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে চাই। বলতে চাই, ইয়া মাবুদ বাংলাদেশকে তুমি কোরআনের শাসন দাও।" এই বক্তব্য তার ব্যক্তিগত অঙ্গীকার এবং জামায়াতের আদর্শিক লক্ষ্যের প্রতি তার গভীর বিশ্বাসের প্রতিফলন। তিনি উল্লেখ করেন, মাওলানা আবু সাঈদ ইসলামী আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ হয়েছেন এবং সাম্প্রতিক "চব্বিশের আন্দোলনে" আরেক "আবু সাঈদ" শহীদ হয়েছেন। তিনি শহীদদের জন্য দোয়া করেন এবং "জালিম শাসকের আমলে" নিহত সকল শহীদকে কবুল করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।

জামায়াত আমির তার বক্তব্যে সাম্প্রতিক উত্তরা বিমান দুর্ঘটনার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "সোমবার বিমানবাহিনীর বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অনেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক মারা গেছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, আরও ৩০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। যারা হাসপাতালে আছেন আল্লাহ তাদের সুস্থ করে তুলুন। তাদের আপনজনের বুকে ফিরিয়ে দিন।" তার এই সমবেদনা জাতীয় দুর্যোগের মুহূর্তে মানবিক সংহতির বার্তা বহন করে।

ডা. শফিকুর রহমান পথসভার আগে জামায়াতে ইসলামীর দাকোপ উপজেলা আমির মাওলানা আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন এবং তার শোকাহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উল্লেখ্য, ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে গত শনিবার (১৯ জুলাই) রাত পৌনে ৩টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গার চৌরাস্তা মোড়ে রয়েল পরিবহনের একটি দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় দাকোপ উপজেলা আমির মাওলানা আবু সাঈদ (৫২) মারা যান। এ সময় গুরুতর আহত হন জামায়াত কর্মী মো. আনিসুর রহমান ও মো. ইকবাল হোসেন। আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে চালনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং তারা এখন আশঙ্কামুক্ত। জামায়াত আমিরের দাকোপ সফর এবং শহীদ আমিরের কবর জিয়ারত কর্মীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দাকোপ উপজেলার ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মো. ওয়াহিদুজ্জামানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই পথসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

এছাড়াও, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের অসংখ্য নেতা-কর্মী সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান খানমাস্টার শফিকুল আলম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, বাগেরহাট জেলা আমির মাওলানা রেজাউল করিম, খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবির সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন ও খুলনা জেলা নায়েবে আমির মাওলানা গোলাম সরোয়ার

আরও উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট জেলা নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমানঅধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, বাগেরহাট জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, খুলনা জেলা কর্ম ও শূরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুর রব, বটিয়াঘাটা উপজেলা আমির মাওলানা শেখ মো. আবু ইউসুফ, চালনা বিল্লালিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা অজিহুর রহমান। এছাড়াও পাইকগাছা উপজেলা আমির মাওলানা আবু সাঈদ, কয়রা উপজেলা আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, হরিণটানা থানা আমির আব্দুল গফুর, পাইকগাছা উপজেলা সেক্রেটারি মো. আলতাফ হোসেন, কয়রা উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা মো. সাইফুল্লাহ, রামপাল উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা জিহাদুজ্জামান ও মোংলা পৌর যুব বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা মোস্তাইন উপস্থিত ছিলেন। এই বিশাল উপস্থিতি জামায়াতের তৃণমূল পর্যায়ের সাংগঠনিক শক্তির প্রমাণ দেয়।