বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

ওমরা পালন করা ফরজ, ওয়াজিব, নাকি সুন্নত?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ৩০, ২০২৫, ০১:০৩ পিএম

ওমরা পালন করা ফরজ, ওয়াজিব, নাকি সুন্নত?

ছবি- সংগৃহীত

ইসলাম ধর্মে হজ ও ওমরাহ মুসলিম উম্মাহর জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হজ ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি হলেও, ওমরাহর গুরুত্ব ও বিধান নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে—এটি কি ফরজ, ওয়াজিব, নাকি সুন্নত? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জানা এবং এর ফজিলত সম্পর্কে অবগত হওয়া প্রতিটি মুসলিমের জন্য জরুরি, বিশেষ করে যারা বাইতুল্লাহর জিয়ারত করতে আগ্রহী।

ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী, ওমরাহ করার সামর্থ্য থাকলে জীবনে একবার ওমরাহ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। এর অর্থ হলো, এটি এমন একটি সুন্নত যা রাসুলুল্লাহ (সা.) সর্বদা পালন করতেন এবং যার গুরুত্ব অনেক বেশি। এটি ফরজ বা ওয়াজিবের পর্যায়ে পড়ে না, তবে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পালন না করলে গুনাহের আশঙ্কা থাকে।

ওমরাহর সময়: ওমরার জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। শুধু জিলহজ মাসের ৯-১৩ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন ওমরাহ করা মাকরূহ (অপছন্দনীয়)। এছাড়া বছরের যেকোনো সময় ওমরাহ করা জায়েজ আছে।

ওমরাহ পালনের শর্তাবলী: হজের মতো ওমরাহর জন্যও সুস্থ, শারীরিকভাবে সক্ষম এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া আবশ্যক। একইসঙ্গে আর্থিক সামর্থ্যও থাকতে হবে, তাহলেই ওমরাহ করা সুন্নত। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়ার অর্থ হলো, সফরের সময়ে নিজের, পরিবারের ও অধীন ব্যক্তিদের সব ধরনের খরচ নিশ্চিত করার পর ওমরাহ পালনের মতো অর্থ জমা থাকা।

রমজানে ওমরাহর বিশেষ ফজিলত: পুরো বছরই ওমরাহ করা যায়, তবে রমজান মাসে ওমরাহ করা সবচেয়ে উত্তম। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "রমজানে একটি ওমরাহ করা আমার সাথে একটি হজ করার সমতুল্য।" (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৬৩)

ওমরাহর ফজিলত: ওমরাহর ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "এক ওমরাহর পর আরেক ওমরাহ—উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গুনাহের) জন্য কাফফারাস্বরূপ। আর জান্নাতই হলো কবুল হজের প্রতিদান।" (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩)

আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, "তোমরা ধারাবাহিকভাবে হজ ও ওমরা আদায় করতে থাকো। এ দুটি আমল দারিদ্র্য ও গুনাহ বিদূরিত করে দেয়। যেমন—ভাটার আগুনে লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা-জং দূরীভূত হয়ে থাকে।" (তিরমিজি, হাদিস : ৮১০)

অন্য হাদিসে হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, "আল্লাহর পথে যুদ্ধে বিজয়ী, হজকারী ও ওমরাকারী আল্লাহর মেহমান বা প্রতিনিধি। আল্লাহ তাদের আহ্বান করেছেন, তারা তার ডাকে সাড়া দিয়েছেন। আর তারা তার কাছে চেয়েছেন এবং তিনি তাদের দিয়েছেন।" (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৯৩)

এই ফজিলতগুলো ওমরাহর প্রতি মুসলিমদের আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে তোলে। সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিমের উচিত এই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত পালনে সচেষ্ট হওয়া।