শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

নেত্রকোনায় যুবদল নেতা ২২ দিন ধরে নিখোঁজ, গুমের আশঙ্কা পরিবারের

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৫:০৮ পিএম

নেত্রকোনায় যুবদল নেতা ২২ দিন ধরে নিখোঁজ, গুমের আশঙ্কা পরিবারের

ছবি- সংগৃহীত

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় যুবদলের এক নেতা ২২ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল একটি সেতুর নিচ থেকে পানি থেকে উদ্ধার করা হলেও এখনো তার কোনো সন্ধান মেলেনি।নিখোঁজ রফিকুল ইসলাম ওরফে শামীম (৩৬) গন্ডা ইউনিয়নের মনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। বর্তমানে তিনি ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।

নিখোঁজের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দুয়া–আঠারোবাড়ি সড়কের কালিয়ান এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন গন্ডা ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। পরিবারের ভাষ্য, প্রতিপক্ষের করা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ২ জুলাই রাতে রফিকুল ইসলাম বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ। পরিবারের দাবি, তাকে গুম করা হয়েছে

ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন গন্ডা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ নাজমুল রাজ্জাক, সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি রওশন আলী ফকির, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কামাল হোসেন, সদস্যসচিব মেহেদী হাসান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন, সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান, শ্রমিক দলের সভাপতি সুজন মিয়া, রফিকুলের স্ত্রী নাজমা আক্তার ও বাবা আক্কাস মিয়া

বক্তারা বলেন, নিখোঁজের ২২ দিন পার হলেও রফিকুল ইসলামের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে রফিকুল ইসলামকে খুঁজে বের করার দাবি জানান তারা।

পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, রফিকুল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে। স্থানীয় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এম এন মহিবুল্লাহ ও সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের বিরোধকে কেন্দ্র করে গ্রামে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হয়। মহিবুল্লাহর পক্ষে ছিলেন রফিকুল ইসলাম এবং সাইফুলের পক্ষে ছিলেন মোস্তফা কামাল। তারা দুজনেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। গত ৮ জুন এ বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে এবং কয়েকজন আহত হন। পরে উভয় পক্ষ মামলাও করে।

রফিকুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার বলেন, "মাদ্রাসার বিরোধ নিয়ে গ্রামে দুটি পক্ষ হয়েছে। ঘটনার এক সপ্তাহ আগে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়ি এসে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে বলেছিল, আমার স্বামীকে আর বাঁচতে দেবে না। তাকে গুম করবে। এখন তার খোঁজ নেই। আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।"

এ বিষয়ে জানতে মোস্তফা কামালের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, রফিকুল ইসলাম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে মোস্তফা কামাল ও তার সহযোগী ব্যক্তিরা পলাতক।

এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, নিখোঁজ রফিকুল ইসলামের মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এই তথ্য তিনি টেলিফোনে পেয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। তবে নিখোঁজ যুবদল নেতার সন্ধান এখনো মেলেনি।