সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় ৩১ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর জন্য দুঃসংবাদ এসেছে। চলতি সেপ্টেম্বর মাসে তাদের হাতে 'মিড ডে মিল' বা দুপুরের খাবার পৌঁছানোর কথা থাকলেও, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এই প্রকল্পের জন্য লাইভ টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে, যা শেষ হতে আরও সময় লাগবে। তবে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে, টেন্ডার কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরপরই দ্রুত এই কর্মসূচি চালু করা হবে।
'সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি' নামের এই প্রকল্পের অধীনে শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। খাদ্যতালিকায় রয়েছে বনরুটি, সিদ্ধ ডিম, ইউএইচটি দুধ, ফরটিফাইড বিস্কুট এবং মৌসুমি ফল বা কলা। প্রতিদিনের এই খাবার শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করবে এবং ক্লাসে তাদের মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এর ফলে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমবে এবং বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।
প্রকল্পের মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার বেশি, যার ৯৭ শতাংশই খাদ্য সরবরাহের জন্য বরাদ্দ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এর জন্য ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় সপ্তাহে রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম দেওয়া হবে। সোমবার বনরুটি ও দুধ এবং বুধবার বিস্কুট ও ফল দেওয়া হবে। প্রতিটি খাবারের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণও নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মনিটরিং কমিটি গঠন এবং প্রশিক্ষণের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করবে, যেখানে স্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ এবং শিক্ষা কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। পাশাপাশি, ১৯ হাজারেরও বেশি শিক্ষক ও কর্মকর্তার জন্য ওরিয়েন্টেশন এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, "প্রকল্পটির অনেক কাজ বাকি ছিল। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্রুত অনেক কাজ এগিয়েছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই এটি চালু হবে।"
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রাথমিকভাবে দেশের ৮ বিভাগের ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার প্রায় ১৯ হাজার ৪১৯টি বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে। এই পাইলট প্রকল্পটি সফল হলে পর্যায়ক্রমে সারা দেশের সব স্কুলে মিড ডে মিল চালু করা হবে।