সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫, ১০:১৪ পিএম
সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি বিশ্বে একটি নতুন ধরনের প্রতারণা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গুগলের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে যে, হ্যাকাররা তাদের অফিসিয়াল সাপোর্ট নম্বর ব্যবহার করে জিমেইল ব্যবহারকারীদের টার্গেট করছে। তাই একটি নির্দিষ্ট নম্বর থেকে কল এলেই আপনাকে ধরে নিতে হবে যে, আপনি বিপদে পড়তে যাচ্ছেন অথবা আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাকের চেষ্টা চলছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে '২৫০ কোটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে'—এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও গুগল এই দাবিকে পুরোপুরি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে, তবে তারা স্বীকার করেছে যে, হ্যাকাররা জিমেইল ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ বাড়িয়েছে। বিশেষ করে ফোন কল প্রতারণা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
গুগল স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, তারা কখনোই ফোন করে ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড রিসেট করতে বা অ্যাকাউন্ট সমস্যার সমাধান করতে বলে না। কিন্তু প্রতারকরা গুগলের অফিসিয়াল সাপোর্ট নম্বর +1 650-253-0000 নকল (স্পুফ) করে ব্যবহারকারীদের ফোন করছে। এই নম্বর থেকেই কল এলে তা একটি প্রতারণার ইঙ্গিত।
প্রোটন সিকিউরিটির সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, প্রতারকরা নিজেদের গুগলের কর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করে দাবি করে যে, "অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কার্যক্রম ধরা পড়েছে।" এরপর তারা নিরাপত্তার অজুহাতে ব্যবহারকারীকে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে চাপ দেয়। একবার কেউ এই ফাঁদে পা দিলেই প্রতারকরা সহজেই তার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।
রেডিটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এই ধরনের প্রতারণামূলক কলের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্বল পাসওয়ার্ড এখনও সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। ফিশিং, ক্রেডেনশিয়াল স্টাফিং এবং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে হ্যাকাররা সহজেই অ্যাকাউন্ট দখল করছে।
প্রতারকদের কবল থেকে বাঁচতে হলে কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি:
১. কল এড়িয়ে চলুন: গুগলের সাপোর্ট নম্বর থেকে আসা কোনো কলে কখনোই সাড়া দেবেন না। পাসওয়ার্ড পরিবর্তন বা কোনো লিংকে ক্লিক করার নির্দেশনা মেনে চলবেন না। ২. সরাসরি যাচাই করুন: কোনো সন্দেহ হলে সরাসরি গুগল অ্যাকাউন্টে লগইন করে 'Security' সেকশনে যান এবং 'Review Security Activity' চেক করুন।
৩. শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা: নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন, পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন এবং এসএমএস-ভিত্তিক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) এর পরিবর্তে অথেন্টিকেটর অ্যাপ ব্যবহার করুন।
৪. পাসকি ব্যবহার: সম্ভব হলে পাসকি সক্রিয় করুন, যা পাসওয়ার্ডের চেয়েও বেশি নিরাপদ।
কিপার সিকিউরিটির শেন বার্নি বলেছেন, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড, দুই স্তরের নিরাপত্তা এবং পাসকি ব্যবহার করলে ঝুঁকি পুরোপুরি দূর না হলেও হ্যাকারদের পক্ষে আক্রমণ চালানো অনেক কঠিন হবে।