সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

জামায়াত আমিরকে দেখতে গিয়েছিলেন কারা?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২১, ২০২৫, ১১:২৭ এএম

জামায়াত আমিরকে দেখতে গিয়েছিলেন কারা?

১৯ জুলাই, শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান বক্তব্য রাখার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এই ঘটনার পর তার শারীরিক খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে ভিড় করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও তাকে দেখতে যান।

মাঠ পর্যায়ের তথ্যানুযায়ী, জামায়াত আমিরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন খোদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সহমর্মিতার জন্য ডা. শফিকুর রহমান ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি এবং এটিকে 'স্মরণীয়' আখ্যা দিয়েছেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, কারণ এটি দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে এক ধরনের মানবিক সংযোগের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা আপাতদৃষ্টিতে রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, রোববার (২০ জুলাই) দিবাগত রাতে ডা. শফিকুর রহমান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একাধিক পোস্টের মাধ্যমে যারা তার শারীরিক খোঁজখবর নিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। পেইজ অ্যাডমিনের বরাতে এক পোস্টে জানানো হয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী জনাব মনির হায়দার, মেক্সিকোতে নিয়োজিত বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী, ফ্রান্সে বসবাসরত জনপ্রিয় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আল-জাজিরার তদন্তকারী ইউনিটের সদস্য জনাব জুলকারনাইন সায়ের, এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ইলিয়াস হোসাইন তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন। এছাড়াও ফেস দ্য পিপলের স্বত্বাধিকারী সাইফুর সাগরসহ আরও অনেকে জামায়াত আমিরের বাসায় তাকে দেখতে আসেন।

বিভিন্ন সূত্রমতে, আরেকটি পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্ণেল অলি আহমদ (বীরবিক্রম), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির পির সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূইয়া, জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমির ফয়সল, এনসিপি'র দক্ষিণ অঞ্চলের মূখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তর অঞ্চলের মূখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও রাজনীতিবিদ ড. ফয়জুল হক, এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ আরও অনেক সম্মানিত রাজনীতিবিদ ডা. শফিকুর রহমানের খোঁজখবর নিয়েছেন। এই তালিকাটি ইঙ্গিত দেয় যে, জামায়াত আমিরের অসুস্থতা বিভিন্ন মতাদর্শের রাজনীতিবিদ ও সামাজিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে এক ধরনের ঐক্যবদ্ধ সহানুভূতি তৈরি করেছে।

এই ঘটনা একদিকে যেমন জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক অবস্থানকে কিছুটা নরম করতে সাহায্য করতে পারে, তেমনি দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ঐক্য ও সহমর্মিতার একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। ডা. শফিকুর রহমানের অসুস্থতা এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের সহমর্মিতা ভবিষ্যতে দেশের রাজনীতিতে কোনো নতুন মোড় নিতে পারে কিনা, তা জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।