বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

ঘুষের জন্য হাত বাড়ালে অবশ করে দেওয়া হবে

বিনোদন ডেস্ক

জুলাই ২২, ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম

ঘুষের জন্য হাত বাড়ালে অবশ করে দেওয়া হবে

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, “আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চাই, যেখানে আমরা নিজেরা চাঁদাবাজি করব না এবং কাউকে চাঁদাবাজি করতে দেব না। কোথাও আমাদের লোকেরা ঘুষ হাতে তুলে নেবে না, আর ঘুষের জন্য হাত বাড়ালে তার হাত অবশ করে দেওয়া হবে।”

মঙ্গলবার (২২ জুলাই, ২০২৫) বিকেলে রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক শোকসভায় এসব কথা বলেন তিনি। তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে, কারণ এটি জামায়াতের দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়।

এর আগে ঢাকায় জামায়াতের সমাবেশে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়া রংপুর মহানগর জামায়াতের রোকন শাহ আলমের কবর জিয়ারত এবং তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ডা. শফিকুর রহমান রংপুরে আসেন। এটি জামায়াতের নেতা-কর্মীদের প্রতি তার সংহতি এবং ব্যক্তিগত অনুভূতির বহিঃপ্রকাশ।

ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে সরকার গঠনের সুযোগ পেলে জামায়াতের নীতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সরকার গঠনের সুযোগ পেলে দলের কেউ সরকারি প্লট নেবে না, বিনা শুল্কের গাড়িও ব্যবহার করবে না। আমরা আগে নিজেদের ঘর সামলাব, তারপর বাহির সামলাব। এক দেশে দুই আইন চলবে না। আমরা যদি না নিই, কাউকেও নিতে দেব না।” তার এই মন্তব্য সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি জামায়াতের অঙ্গীকার তুলে ধরে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা গর্জন করব সংসদের ভেতরে, গর্জন করব রাজপথে, আর তা আপনাদের সঙ্গে নিয়ে। যারা রাজনীতিতে আসবেন, তাদের বলব, দয়া করে ভিক্ষুক, চোর বা লুটেরা মানসিকতা নিয়ে রাজনীতিতে আসবেন না। রাজপথের মানসিকতা নিয়ে আসবেন। মানুষের পকেট কাটবেন না, চাঁদাবাজি করবেন না। এটি জঘন্য অপরাধ। যারা দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন, তাদের বলব, ভিক্ষা অনেক বেশি সম্মানজনক।” এই বক্তব্য দুর্নীতিবাজদের প্রতি তার স্পষ্ট বার্তা।

জামায়াতের এই শীর্ষনেতা অভিজাত শ্রেণির জন্য লড়াই না করার কথা জানিয়ে বলেন, “অভিজাত শ্রেণির জন্য লড়াই করব না। অভিজাত শ্রেণির জন্য লড়াই আমার করা লাগবে না কারণ ওরা ওদের স্বার্থ খুব ভালো বোঝে। আমরা লড়াই করব খেটে-খাওয়া কৃষক ভাইয়ের জন্য, শ্রমিক ভাই-বোনদের জন্য, চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য, পরিচ্ছন্নতা কর্মী যাদের আমরা অবহেলা করি তাদের সম্মান ফিরিয়ে আনার জন্য। আমাদের লড়াই হবে বাংলাদেশের মানুষের সম্পদ পাহারা দেওয়ার জন্য।” এটি জামায়াতের শ্রেণী-সংগ্রামের প্রতি তার অবস্থানের ইঙ্গিত।

শফিকুর রহমান দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, “যে দিকে তাকাই, শুধু অপরাধ আর অপরাধই দেখতে পাই। নিকষ কালো অন্ধকারে ঢেকে গেছে সারা দেশ। এসব কালো পর্দা আমরা ছিঁড়ে খানখান করে ফেলব। এমন তৌফিক আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে দান করেন।”