রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২

দারিদ্রতার বেড়াজালে আবদ্ধ নাসুমের বাবা; কাজ করছেন সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে!

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ০৯:৩৫ পিএম

দারিদ্রতার বেড়াজালে আবদ্ধ নাসুমের বাবা; কাজ করছেন সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে!

ছবি - সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে এক আবেগঘন এবং বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। একজন জাতীয় দলের ক্রিকেটার, যিনি দেশের জন্য খেলেন, তার বাবা দারিদ্রতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই ভিডিওটি ক্রিকেটার নাসুম আহমেদ এবং তার বাবা আক্কাস আলীর জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে।

ভিডিওর তথ্য অনুযায়ী, নাসুমের বাবা আক্কাস আলী বর্তমানে সিলেট হাউজিং এস্টেট এলাকায় একজন নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করছেন। তিনি প্রতি মাসে মাত্র ৮,০০০ টাকা মজুরি পান, যা দিয়ে তার জীবনধারণ করা কঠিন।

এটি একটি দুঃখজনক চিত্র, কারণ তার ছেলে নাসুম আহমেদ একজন জাতীয় দলের ক্রিকেটার, যার আয় অনেক বেশি। এই ঘটনাটি সমাজের শ্রেণি বৈষম্য এবং সম্পর্কের জটিলতাকে তুলে ধরে।

ভিডিওতে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। গত চার বছর ধরে ছেলে নাসুমের সাথে তার কোনো যোগাযোগ নেই। নাসুমের এক আত্মীয় এবং এলাকার বাসিন্দারা জানান যে, নাসুমের বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে এই দূরত্ব সৃষ্টি হয়।

এটি কেবল একটি পারিবারিক সমস্যা নয়, বরং এটি একটি মানবিক সংকট। একজন বাবা যিনি তার ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর জন্য অনেক ত্যাগ ও কষ্ট করেছেন, আজ তিনি তার ছেলের থেকে বিচ্ছিন্ন।

নাসুমের পরিবার এবং এলাকার মানুষ জানান যে, নাসুমকে ক্রিকেটার বানানোর পেছনে তার বাবা আক্কাস আলীর অনেক ত্যাগ ও কষ্ট ছিল। তিনি তার ছেলের স্বপ্ন পূরণের জন্য অনেক কিছু বিসর্জন দিয়েছেন।

তার এই ত্যাগ এবং কষ্টই নাসুমকে একজন সফল ক্রিকেটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু তার এই ত্যাগের প্রতিদান হিসেবে তিনি আজ তার ছেলের থেকে বিচ্ছিন্ন এবং দারিদ্রতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

অন্যদিকে, নাসুমের দাবি হলো, তিনি প্রতি মাসেই তার বাবার কাছে পর্যাপ্ত টাকা পাঠিয়ে তার দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ ভিডিওতে তার বাবার জীবনের বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন।

এই ঘটনাটি কেবল একটি পারিবারিক গল্প নয়, বরং এটি একটি সামাজিক বার্তা। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সাফল্য এবং খ্যাতি অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো পারিবারিক সম্পর্ক এবং মানবিক মূল্যবোধ।

একজন সফল ব্যক্তি যদি তার শিকড় এবং যারা তাকে সফল হতে সাহায্য করেছে, তাদের ভুলে যায়, তাহলে তার সাফল্য অর্থহীন হয়ে পড়ে। এই ঘটনাটি আমাদের সমাজের জন্য একটি বড় ধরনের সতর্কবার্তা।