জুলাই ৩০, ২০২৫, ১২:০৫ এএম
চট্টগ্রামের রাউজানে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়কের গাড়িবহরে হামলা ও দলের দু'পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দল জানিয়েছে, শিগগিরই নতুন কমিটি গঠন করা হবে। এই সিদ্ধান্তের কথা মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এছাড়াও, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তর জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিনসহ উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের মোট ৫ জন নেতাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় আদর্শের বাইরে গিয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের ভেতরে কোন্দল জিইয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে জেলার রাউজানে উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। এতে গোলাম আকবরসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন। এই হামলার জন্য গোলাম আকবর খন্দকার সরাসরি দলের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে, তার গাড়ি তছনচ করে দিয়েছে এবং কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আহত নেতাকর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলেও তিনি জানান।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে দলের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে তিনি ঢাকায় আছেন এবং এই হামলার বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে রাউজান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের কবর জিয়ারত করতে যাচ্ছিলেন গোলাম আকবর খন্দকার। এ সময় তার সাথে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও ছিলেন। কিন্তু পথে রাউজান পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের সত্তরঘাট এলাকায় আগে থেকে ওঁতপেতে থাকা একদল দুর্বৃত্ত তার গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় এবং সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই হামলার জেরে নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিএনপির এই দুই প্রভাবশালী নেতা, গোলাম আকবর খন্দকার এবং গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে গত এক বছরে রাউজানে উভয়পক্ষের ১৩ জন নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় বিএনপি এই দুই নেতাকে শোকজ করেছিল, কিন্তু তাতেও সুফল আসেনি। অবশেষে কেন্দ্রীয় কমিটি কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হলো।
আপনার মতামত লিখুন: