সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৫:২৬ পিএম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত ফলাফল নিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে এখন ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষ করে, গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশ্যে আসা ছাত্রশিবিরের নাটকীয় সাফল্য সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। প্রায় ৩৫ বছর পর, একটি হত্যাকাণ্ডের জের ধরে ১৯৮৯ সাল থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ছিল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির।
কিন্তু মাত্র ১১ মাসের প্রকাশ্য কার্যক্রমে, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে তাদের পারফরম্যান্স ছাত্রদল ও অন্যান্য সংগঠনকে ছাড়িয়ে গেছে।নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায়, ছাত্রদল ও গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) প্রার্থীরা আশানুরূপ ফল পায়নি।
ছাত্রদলের ভিপি ও জিএস প্রার্থীরা কোনো ভোটকেন্দ্রেই জয়লাভ করতে পারেননি এবং কোনো কোনো কেন্দ্রে মাত্র সাত বা আটটি ভোট পেয়েছেন। জাকসুর ২৫টি পদের একটিতেও তারা জয়ী হতে পারেনি। অন্যদিকে, বাগছাস মাত্র দুটি পদে জয় পেয়েছে এবং ভিপি ও জিএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের প্রার্থীরা হেরে গেছেন। ছাত্রলীগের অনুপস্থিতিতেও এই দুই সংগঠনের এমন ফল রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে ক্যাম্পাসে তাদের প্রকাশ্য কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা গোপন পরিচয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে সক্রিয় ছিল। তারা শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিজেদের সম্পৃক্ত রেখে একটি শক্তিশালী নিজস্ব ভোটব্যাংক গড়ে তুলেছিল।
প্রকাশ্য রাজনীতি শুরুর পর থেকে নারী নেতৃত্বের অংশগ্রহণ, স্বাস্থ্যসেবা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অনুপস্থিতি তাদের প্রতি শিক্ষার্থীদের আস্থা বাড়িয়েছে। ভিপি পদ ছাড়া তাদের প্যানেলের প্রায় সব প্রার্থীই ভোটারদের সমর্থন পেয়েছে।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, "বিগত সময়ে আমাদের কাজ করার সুযোগ ছিল না।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ পায়নি। তবে যেহেতু আমরা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করেছি, তাই আমরা ভোট পেয়েছি।" তিনি আরও যোগ করেন, "আমরা প্রতিহিংসা বা নেতিবাচক কার্যক্রমে জড়িত নই। এ কারণে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য দলের সঙ্গে আমাদের পার্থক্যটা বুঝতে পারছে।"
এই ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক ভাবমূর্তি এবং দীর্ঘমেয়াদী শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রমই ছাত্র রাজনীতিতে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।