সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২
ক্রিকেট

পাকিস্তানের ‍‍`রূঢ় জাগরণ‍‍` প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কাছে ৭ উইকেটে হার

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২১, ২০২৫, ০১:০০ পিএম

পাকিস্তানের ‍‍`রূঢ় জাগরণ‍‍` প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কাছে ৭ উইকেটে হার

ছবি- সংগৃহীত

পাকিস্তানের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপকে মাত্র ১১০ রানে গুটিয়ে দিতে বাংলাদেশের বোলাররা সম্মিলিতভাবে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। বিশেষ করে, পেসার তাসকিন আহমেদ ৩টি উইকেট নিয়েছেন, যা পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মূল কারণ। একইসাথে, বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ৩টি রান-আউট করে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। মুস্তাফিজুর রহমান তার চার ওভারের স্পেলে মাত্র ৬ রান দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে কৃপণ বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন, যা তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের দারুণ উদাহরণ।

মাঠ পর্যায়ের তথ্যানুযায়ী, পাকিস্তানের ব্যাটিং বিপর্যয় শুরু হয়েছিল একটি সহজ ক্যাচ ফেলার পর। তাসকিন আহমেদ প্রথম ওভারেই ফখর জামানের একটি সহজ ক্যাচ ফেলে দিলেও, পরের ওভারেই তিনি সাইম আইয়ুবকে আউট করে সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেন। বাংলাদেশের ভাগ্য আরও সুপ্রসন্ন হয় তৃতীয় ওভারে, যখন মোহাম্মদ হারিস (যিনি দুই দলের শেষ সাক্ষাতে সেঞ্চুরি করেছিলেন) মেহেদী হাসানের বলে শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন। একটি বড় বাউন্ডারি লক্ষ্য করে খেলা এই শটটি ছিল অবিবেচকের মতো, যখন বাউন্ডারি লাইনে দুজন ফিল্ডার পাহারায় ছিলেন।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, দুটি দ্রুত উইকেট হারানোর পরও পাকিস্তানের আগ্রাসী খেলার চেষ্টা বুমেরাং হয়। তানজিম হাসান সালমান আঘার বিরুদ্ধে একটি দুর্দান্ত প্রথম ওভার করেন, যার ফলস্বরূপ সালমান উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। বাংলাদেশের ডট বলের চাপ মোহাম্মদ নওয়াজের রান-আউটের কারণ হয় অষ্টম ওভারে, যখন ফখর জামান একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিঙ্গেল নিতে অস্বীকার করেন। এরপর ১২তম ওভারে খুশদিল শাহের সাথে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে ফখর জামান নিজেই রান-আউট হন। মাঝ উইকেটে পিছলে গিয়েছিলেন ফখর, আর লিটন দাস বিদ্যুৎ গতিতে বেল ফেলে দেন।

বিভিন্ন সূত্রমতে, মুস্তাফিজুর রহমান ২৩ বলে ১৭ রান করা খুশদিলকে ফেরান। তিনি পরের বলেই উইকেট পেতে পারতেন, কিন্তু অধিনায়ক লিটন দাস ফাহিম আশরাফের বিরুদ্ধে এলবিডব্লিউ আপিলে রাজি হননি। রিপ্লেতে দেখা যায়, সেটি আউট ছিল। মুস্তাফিজ অবিচল ছিলেন, এবং তার ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নেন, যা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো বোলারের ৪ ওভারের পূর্ণ স্পেলে সবচেয়ে কম রান দেওয়ার রেকর্ড। শেষ ওভারে পাকিস্তান ৩ বলে ৩ উইকেট হারায়। তাসকিন দুটি উইকেট নেন এবং একটি রান-আউট হয়, যার ফলে পাকিস্তান মাত্র ১১০ রানে অলআউট হয়।

১১২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটাও ভালো ছিল না। তানজিদ হাসান প্রথম ওভারেই mid-on-এ ক্যাচ দিয়ে আউট হন। টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হওয়া বাঁহাতি পেসার সালমান মির্জা এই উইকেটটি পান। লিটন দাসও সালমানের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। তবে এরপরই পারভেজ হোসেন ইমন ৫৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তিনি ৩৯ বলে ৫টি ছক্কা ও ৩টি চারের সাহায্যে এই রান করেন। তৌহিদ হৃদয়ও ৩৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। আব্বাস আফ্রিদি হৃদয়কে আউট করলেও, জাকার আলি প্রথম ৪ বলে দুটি চার মেরে এবং পারভেজ আশরাফকে লক্ষ্য করে আরও দুটি ফ্ল্যাট-ব্যাট শট খেলে জয়ের পথ সুগম করেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৭ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয়। এই জয় নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের জন্য একটি বড় ধাক্কা এবং বাংলাদেশের জন্য আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর একটি দারুণ সুযোগ।