সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২

জুলাই ডিনায়াল: এক নতুন রাজনৈতিক প্রবণতার দৃষ্টিপাত

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২৫, ২০২৫, ০৭:২১ পিএম

জুলাই ডিনায়াল: এক নতুন রাজনৈতিক প্রবণতার দৃষ্টিপাত

ছবি- সংগৃহীত

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যাকে লেখক ও বিশ্লেষকরা "জুলাই ডিনায়াল" বা "জুলাই অস্বীকারের রাজনীতি" হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। এই প্রবণতাটি অনেকটা জায়োনিস্টদের 'হলোকাস্ট ডিনায়াল'-এর রাজনৈতিক কৌশলের অনুকরণ, যেখানে একটি ঐতিহাসিক ঘটনাকে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহার করা হয়।

কিছু বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী জুলাইয়ের ঘটনাকে নিজেদের একক কৃতিত্ব হিসেবে দাবি করে, এবং যারা তাদের বয়ানের সঙ্গে একমত নন, তাদের 'জুলাই ডিনায়ালকারী' হিসেবে চিহ্নিত করছেন। এই কৌশলটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাকে যেভাবে একটি দলীয় বয়ানে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, তার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। ১৯৭১-এর পর জন্ম নেওয়া অনেককেও যদি লীগের বয়ানে বিশ্বাস না করতে দেখা যায়, তাদের তখন '৭১ ডিনায়ালকারী' হিসেবে চিহ্নিত করে গণশত্রুতে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়েছে। একইভাবে, জুলাইয়ের ঘটনাকে একটি নির্দিষ্ট দলের বা গোষ্ঠীর একক কৃতিত্ব হিসেবে তুলে ধরে অন্যদের রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক করার চেষ্টা চলছে।

বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই ধরনের প্রবণতা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিক হিসেবে টিকে থাকার জন্য কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করা অপরাধ হতে পারে না। ইতিহাসের বহু ব্যাখ্যা থাকতে পারে এবং কোনো একক দল বা গোষ্ঠীর বয়ানই চূড়ান্ত সত্য হতে পারে না। এই ধরনের 'অস্বীকারের রাজনীতি' বিভেদ তৈরি করে এবং সমাজে একটি গোত্রভিত্তিক মানসিকতা গড়ে তোলে, যা নাগরিক অধিকারভিত্তিক রাজনীতির পরিপন্থী।

এই রাজনৈতিক খেলায় কিছু বুদ্ধিজীবীর ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের এই প্রচেষ্টা গণঅভ্যুত্থানকে একটি দলীয় প্রকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা মাত্র। যারা জনগণের উইল বা আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে থাকে, তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়া উচিত, কোনো গোষ্ঠীর হাতে নয়।