আগস্ট ১২, ২০২৫, ০৯:৫০ এএম
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে বারবার বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করছে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে প্রভাবিত করছে। গত ছয় মাসে একাধিকবার ভারতের পক্ষ থেকে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার সর্বশেষ সংযোজন হলো স্থলবন্দর দিয়ে আরও চার ধরনের পাটপণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পাটশিল্পের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
ভারত বাংলাদেশের আরও চার ধরনের পাটজাতীয় পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি সম্পূর্ণ বন্ধ করেছে। মুম্বাইয়ের নভোসেবা সমুদ্র বন্দর দিয়ে পণ্যগুলো আমদানির সুযোগ রাখা হলেও, স্থলপথে এটি কার্যকরভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের পাটপণ্যের রপ্তানিতে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়, যা গতকাল থেকেই কার্যকর হয়েছে।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা পণ্যগুলো হলো:
-
পাটের বস্তা ও ব্যাগ
-
পাটের তৈরি ব্লিসড ও আনব্লিসড বোনা কাপড়
-
পাটের সুতা
-
সুতা কর্ডেজ দড়ি
এ নিয়ে গত ছয় মাসে ভারত চার দফায় বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর আগে গত ১৭ মে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন পণ্যে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। গত ৯ এপ্রিল কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়। সর্বশেষ গত ২৭ জুন কাঁচা পাট, পাটের রোল ও পাটের সুতা স্থলপথে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এ বিষয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুর রউফ বলেন, “ভারত এরকম অশুল্ক বাধা তৈরি করতে পারে এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। আমরা দেশের অভ্যন্তরে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের চাহিদা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছি এবং মূল্য সংযোজিত দামি পণ্য রপ্তানির ব্যবস্থা নিচ্ছি। ভারতের এ সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য ‘সাপে বর’ হবে।”
বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সংগঠনের সভাপতি রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, “নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় আমদানিকারকদের খরচ চার গুণ বেড়েছে এবং সময় লাগছে দ্বিগুণ। এ কারণে রপ্তানি বাজার হিসেবে ভারতকে ধরে রাখা আর বাণিজ্যিকভাবে সম্ভব হবে না।” তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার বাজার লক্ষ্য করে পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পরামর্শ দেন।