শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

রাশিয়ার উপকূলে ৮.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ৩১, ২০২৫, ১২:৫৪ পিএম

রাশিয়ার উপকূলে ৮.৮ মাত্রার  শক্তিশালী ভূমিকম্প

ছবি- সংগৃহীত

রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের উপকূলে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং এর আগে তিমির অস্বাভাবিক আগমনের ঘটনা নিয়ে একটি সংবাদ প্রতিবেদন এখানে তুলে ধরা হলো।

ভিডিওতে রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের কাছে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং তার পূর্বে অস্বাভাবিকভাবে উপকূলের দিকে আসা বেলুগা তিমির উপস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ভূমিকম্পের বিস্তারিত: এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৮.৮। এটি রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের উপকূলে বুধবার সকালে আঘাত হানে। এর প্রভাবে প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান সহ ৫২টি দেশ ও অঞ্চলে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। তিনটি ভিন্ন স্তরের জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হয়েছিল। রাশিয়া, ইকুয়েডর এবং উত্তর-পশ্চিম হাওয়াইয়ান দ্বীপপুঞ্জে ৩ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। চিলি, কোস্টারিকা, ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া, গুয়াম, হাওয়াই, জাপান, জার্ভিস দ্বীপ, জনস্টন অ্যাটল, কিরিবাতি, মিডওয়ে দ্বীপ, পালমিরা দ্বীপ, পেরু, সামোয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জে ১ থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হয়েছিল।

শক্তিশালী ভূমিকম্পের একদিন আগে রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের উপকূলে পাঁচটি বেলুগা তিমি ভেসে আসে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা নিয়ে নেটনাগরিকদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। কেউ কেউ এটিকে প্রকৃতির সতর্কতা হিসেবে দাবি করেন যা উপেক্ষা করা হয়েছিল।

বেলুগা তিমি সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ: বেলুগা তিমি সাধারণত বরফে ঢাকা আর্কটিক বা উপ-আর্কটিক অঞ্চলে বাস করে। তারা সামাজিক, বুদ্ধিমান এবং কৌতূহলী প্রাণী। বিভিন্ন ধরনের শব্দ করে যোগাযোগ করার জন্য তারা পরিচিত, যার কারণে তাদের "সাগরের ক্যানারি" বলা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক বেলুগা তিমি উজ্জ্বল সাদা রঙের হয়, যখন ছোটগুলো ধূসর রঙের হয়। তারা সাধারণত গভীর জলে থাকে। অসুস্থতা, পরিবেশগত চাপ বা মস্তিষ্কের ভারসাম্যের অভাবে তারা উপকূলে আসতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, বেলুগা তিমির উপকূলে আসা নতুন কিছু নয়, তবে ভূমিকম্পের আগের দিন পাঁচটি তিমির একসাথে আসা অস্বাভাবিক বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রাণীর আচরণ ও ভূমিকম্পের মধ্যে সম্পর্ক: বেলুগা তিমির এই ঘটনাটি কাকতালীয় ছিল নাকি বিপদের পূর্বাভাস ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রাণীর আচরণকে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হিসেবে এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বেলুগা বা অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর উপকূলে ভেসে আসার একাধিক কারণ থাকতে পারে, তবে ভূমিকম্পের সাথে সরাসরি কোনো যোগসূত্র বা সম্পর্ক এখনও পাওয়া যায়নি। ২০১১ সালের জাপান ভূমিকম্পের আগে ডলফিনের একটি ঝাঁককে উপকূলে দেখা গিয়েছিল। অনেকেই এটিকে সতর্কতামূলক চিহ্ন হিসেবে দাবি করেছিলেন, তবে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে এই ধরনের ঘটনা এবং ভূমিকম্পের মধ্যে একটি ধারাবাহিক বা ভবিষ্যদ্বাণীমূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়নি।