জুলাই ২১, ২০২৫, ১১:৪২ এএম
সোমবার (২১ জুলাই) আল জাজিরার খবরে এই ভয়াবহ হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জিকিম ক্রসিংয়ে যখন ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা ত্রাণের আশায় অপেক্ষা করছিলেন, তখনই তাদের ওপর এই হামলা চালানো হয়। এর আগে শনিবার রাতভর গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে মোট নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ১১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ধারাবাহিক হামলা গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জীবনকে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে।
মাঠ পর্যায়ের তথ্যানুযায়ী, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে আরও ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, গাজায় দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি ‘নতুন এক পর্যায়ে’ পৌঁছেছে, যা বিশ্বজুড়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় খাদ্য, পানি, চিকিৎসা সামগ্রী এবং অন্যান্য মৌলিক চাহিদার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, যা মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে মুসলিম জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তিউনিসিয়া, ইরাক, তুরস্ক, মরক্কো, লেবানন এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লাসহ বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তারা গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছেন, যা এই সংঘাতের মানবিক দিকটি তুলে ধরছে। এই বিক্ষোভগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য চাপ বাড়াচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রমতে, জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৮ হাজার ৮৯৫ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৮০ জন। অন্যদিকে, ওই দিনের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০ জনের বেশি লোককে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এই পরিসংখ্যানগুলো চলমান সংঘাতের ভয়াবহতা এবং এর মানবিক মূল্য তুলে ধরে। গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এটি যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনাটি গাজায় দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরদার করেছে।
আপনার মতামত লিখুন: