সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
বাংলাদেশের জনপ্রশাসনে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। সম্প্রতি একাধিক সচিবকে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের অনুমতি না দেওয়ার ঘটনা এটাই প্রমাণ করে। বিশেষ করে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা পদায়নকৃত সচিবদের যোগদান করতে দেননি। এটি প্রথমবার নয়, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
রাজনৈতিক সরকারের সময় এমনটি হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এমনটি আশা করা যায়নি। প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি জনপ্রশাসনের স্থিতিশীলতার জন্য একটি খারাপ দৃষ্টান্ত এবং এতে অস্থিরতা আরও বাড়ছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামানের অবসরের পর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহমান তরফদারকে নতুন সচিব হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি যোগ দিতে গেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন তাকে পরে যোগ দিতে বলেন।
পরে তিনি আবার গেলেও উপদেষ্টা তাকে যোগদানের অনুমতি দেননি। এই ঘটনার পর আব্দুর রহমান তরফদারকে বাংলাদেশ কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সচিব হিসাবে পদায়ন করা হয়েছে।এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান জানান, এই সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।
তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। সংশ্লিষ্ট এক অতিরিক্ত সচিব বলেন, সচিব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে মানদণ্ডগুলো অনুসরণ করা উচিত, তা দেখেই নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু উপদেষ্টারা কেন তাদের যোগদানের অনুমতি দিচ্ছেন না, তা বলা কঠিন। শুধু সচিবই নয়, অনেক সময় সচিবরাও অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিবদের মন্ত্রণালয়ে যোগদানের অনুমতি দেন না।
প্রশাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন সাপেক্ষে একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়ার পর তাকে গ্রহণ না করা প্রকারান্তরে প্রধান উপদেষ্টাকে অবজ্ঞা করা। তারা মনে করেন, সচিব নিয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাকে অবহিত করা উচিত। যদি আগে থেকে এই ধরনের কোনো নির্দেশনা না থাকে, তবে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি ভুল।
এই ধরনের ঘটনা প্রশাসনিক শৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় এবং সরকারের কার্যকারিতাকে বাধাগ্রস্ত করে। এই ধরনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব জনপ্রশাসনে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি করে এবং সামগ্রিক শাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল করে তোলে।