রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

নির্বাচন সামনে রেখে এক হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৭, ২০২৫, ০৩:১৮ পিএম

নির্বাচন সামনে রেখে এক হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক সবসময়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। গত দেড় যুগে তাদের মধ্যে কিছু অবিশ্বাস ও কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেলেও, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন প্রশ্নে তারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা এই দুই দলের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও বিশ্লেষণের জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে যখন নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যেকার সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে, যা আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও জোরালো হচ্ছে। যদিও গত দেড় যুগে তাদের মধ্যে কিছু অবিশ্বাস এবং কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, তবে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন প্রশ্নে উভয় দলই একযোগে কাজ করে চলেছে।

সম্পর্কের টানাপোড়েন ও নীতিগত ভিন্নতা: রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে নির্বাচন এবং সংস্কারের সময়কাল নিয়ে নীতিগত ভিন্নতা রয়েছে। এছাড়াও, জাতীয় সরকার এবং পিয়ার পদ্ধতির বিতর্ক তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়েছিল। এই ভিন্নতাগুলো সত্ত্বেও, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে তাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান লক্ষণীয়।

সম্প্রতি জামায়াতের আমির হাসপাতালে ভর্তি হলে বিএনপির মহাসচিব তাকে দেখতে যান। এমনকি, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও তার খোঁজখবর নেন। এই ঘটনাটি দুই দলের সম্পর্ক নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলে বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার মিডিয়া সেক্রেটারি এই সাক্ষাৎকে পারস্পরিক শিষ্টাচার হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন যে জামায়াতের সাথে বিএনপির সম্পর্ক বর্তমানে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। তার এই মন্তব্য দুই দলের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে ইঙ্গিত বহন করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন খান মোহন মনে করেন যে, মূল বিষয়গুলোতে দুই দলের মধ্যে খুব বেশি বিরোধ নেই। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের পারস্পরিক শিষ্টাচার বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, বৃহত্তর রাজনৈতিক লক্ষ্যের জন্য ভিন্ন মতাদর্শের দলগুলোও একত্রিত হতে পারে।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি এবং জামায়াতের এই কৌশলগত ঐক্য বাংলাদেশের আগামী রাজনৈতিক সমীকরণে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। সরকারের বিরুদ্ধে তাদের এই ঐক্যবদ্ধ অবস্থান আগামী দিনের আন্দোলন এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। যদিও তাদের মধ্যেকার অভ্যন্তরীণ ভিন্নতাগুলো এখনো বিদ্যমান, তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাদের এক ছাতার নিচে নিয়ে আসতে বাধ্য করেছে।