জুলাই ২৫, ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন নীতি ও সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক উচ্চ কমিশনের (OHCHR) কার্যালয় স্থাপনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর অনুমোদনের পর বিভিন্ন ইসলামপন্থী এবং রাজনৈতিক সংগঠন এর তীব্র বিরোধিতা করছে। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের কার্যালয় স্থাপন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি এবং পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের একটি অংশ। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশের প্রধান ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে অন্যতম জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ একটি গণবিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী কোনো চুক্তি আমরা মানতে পারি না। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত গণমিছিলপূর্ব বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন।
মাওলানা ইউসুফী বলেন, “দেশের জনগণ এ রকম চুক্তি করার কোনো ম্যান্ডেট অন্তর্বর্তী সরকারকে দেয়নি। আমাদের পূর্বপুরুষরা যেভাবে ব্রিটিশকে তাড়িয়েছিল, আমরাও সেভাবেই পশ্চিমা আধিপত্যবাদকে রুখে দিব ইনশাআল্লাহ।”
জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী তার বক্তব্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের পক্ষপাতিত্বের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “কলম্বিয়ায় তাদের এই অফিস নিয়ে অনেক অভিযোগ ও বিতর্ক রয়েছে। গাজায় গণহত্যা বন্ধে এই অফিসের কার্যকর কোনো ভূমিকা নেই। ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর যুগের পর যুগ ধরে সীমাহীন বর্বরতা চলছে, অথচ সেখানে তাদের এই অফিস নেই। বাংলাদেশে এই কার্যালয় স্থাপন করার এত দরদ উথলে পড়ল কেন?”
তিনি আরও বলেন, সমকামিতা ও ট্রান্সজেন্ডারসহ বিতর্কিত বিষয়গুলোকে তারা মানবাধিকার হিসেবে দেখে। অন্তর্বর্তী সরকার পশ্চিমা মডেলের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই দেশবিরোধী এই চুক্তি সই করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জমিয়তের মহাসচিব আগামী ৭ আগস্ট জেলায় জেলায় জেলা প্রশাসক বরাবর ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপন চুক্তির প্রতিবাদে স্মারকলিপি প্রদান করার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সহকারী মহাসচিব মাওলানা জয়নুল আবেদীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসাইন কাসেমী, মতিউর রহমান গাজিপুরীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
আপনার মতামত লিখুন: